সচেতন: রাহুল। নিজস্ব চিত্র
হাঁটছেন রাহুল। পাহাড় থেকে সাগর। বলছেন পরিবেশ রক্ষার কথা।
গাইঘাটার পাঁচপোতার বাসিন্দা ডাক্তারি ছাত্র রাহুলদেব বিশ্বাস হাঁটা শুরু করেছিলেন ১৯ ফেব্রুয়ারি, টাইগার হিল থেকে। সেখান থেকে হেঁটে কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি, ইসলামপুর, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা, বহরমপুর, কৃষ্ণনগর পেরিয়ে বৃহস্পতিবার পৌঁছন বনগাঁ শহরে। রাতে বিশ্রাম নিয়ে শুক্রবার সকালে ফের যশোর রোড ধরে হাঁটা শুরু করেছেন। শ্রীরামপুর, কলকাতা হয়ে হাঁটা শেষ হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে, কপিলমনির আশ্রমে। হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ।
‘পরিবেশের জন্য মানুষের পদযাত্রা’— নাম দিয়েছেন পদযাত্রা কর্মসূচির। মানুষকে আরও বেশি করে পরিবেশ সচেতনতার সঙ্গে যুক্ত করাই লক্ষ্য তাঁর।
টাইগার হিল থেকে প্রথমে পনেরোজন হাঁটা শুরু করেছিলেন রাহুলের সঙ্গে। রোজ প্রায় ৩৫–৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন। বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সঙ্গে আরও অনেক মানুষ পা মেলাচ্ছেন, জানালেন রাহুল। তবে পুরো পথটা হাঁটবেন তিনি একাই। অতীতে যশোর রোডের প্রাচীন গাছ বাঁচানোর দাবিতে বনগাঁ থেকে হেঁটে বারাসত পর্যন্ত গিয়েছেন তিনি।
পরবর্তী সময়ে ৩১০টি সংগঠন যুক্ত হয়েছে রাহুলের উদ্যোগে। হাঁটতে হাঁটতে ভিড়ভাট্টা দেখলে সেখানে থামছেন রাহুল। কথা বলছেন। বোঝাচ্ছেন, পরিবেশ বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার কথা। স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন সচেতনতার বার্তা। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। প্লাস্টিক, আর্সেনিক, বায়ুদূষণ নিয়েও সচেতন করা হচ্ছে।
গোটা পথে নানা অভিজ্ঞতা হচ্ছে রাহুলদের।
জানালেন, ইসলামপুর থেকে রায়গঞ্জ যাওয়ার পথে একটা জায়গায় অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের বোঝানোর পরে অনুরোধ করা হয়েছিল হাঁটতে। সকলে চলে গিয়েছিলেন। একজন বয়স্ক ব্যক্তি সাইকেল থেকে নেমে পা মেলান। তিনি বলেছিলেন, ‘‘তোমরা আমাদের জন্য এত দূর থেকে এসেছো। আর আমি একটু হাঁটতে পারব না।’’
মালদহে গঙ্গার বালি দিয়ে পুকুর ও বড় বড় জলাশয় ভরাটের ছবি তুলতে গিয়ে বাধা পেতে হয়েছিল বলেও জানালেন রাহুল। শুক্রবার গাইঘাটার বকচরা এলাকায় লিফলেট বিলির সময় কিছু মানুষ তাঁদের উপরে চড়াও হয়। বাধা দেওয়া হয়। সঙ্গে পুলিশ থাকায় অবশ্য পিছু হঠে হুজ্জুতকারীরা।
শান্তিপুরে হাসপাতালের গাছ কাটা হচ্ছিল। খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে গেলে হাসপাতাল সুপার নিজের ভুল বুঝতে পারেন। কথা দেন, আর কখনও গাছ কাটাবেন না।
রাহুলদের দাবি, উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। রাহুল বলেন, ‘‘আমরা চাই পরিবেশকে বাঁচিয়ে উপযুক্ত সহনশীল উন্নয়ন কর্মসূচি। যা প্রাণী ও উদ্ভিদের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করবে।’’
এ দিন বনগাঁয় ‘কবিতা আশ্রম’ পত্রিকার তরফে রাহুলদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পত্রিকার তরফে বিভাস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পরিবেশ রক্ষায় রাহুলদের কর্মসূচি আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy