এই হাল রাস্তার। ছবি: নির্মল বসু।
রাস্তা না ডোবা বোঝা দায়! কখনও উল্টে যাচ্ছে গাড়ি, কখনও পা পিছলে পড়ে যাচ্ছেন পথচলতি মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বার ভোট এলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে নতুন রাস্তা তৈরির আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই রাস্তা আর তৈরি হয় না। বাধ্য হয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময়ে ব্যাগে গামছা রাখছে স্কুল পড়ুয়ারা।
বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের হাসনাবাদ থানার পাটলিখানপুর পঞ্চায়েতের ওই রাস্তায় বেশিরভাগ জায়গাতেই পিচ বলে প্রায় কিছু নেই। রাস্তার মধ্যে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টি হলে সেই গর্তে জল জমে ছোট ডোবার চেহারা নেয়। প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারহাসনাবাদ থেকে বিশপুর বাজার প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ঘূর্ণি বাঁশতলা থেকে বাইলানি বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা সব থেকে খারাপ। গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটির পাশে রয়েছে পঞ্চায়েত অফিস এবং কয়েকটি স্কুল। ঘূর্ণি, চকপাটলি, বেনা, মহিষপুকুর, ধরমবেড়িয়া এবং বিশপুর গ্রামের মানুষ ওই রাস্তার উপরেই নির্ভরশীল। কিন্তু গত ১০ বছরে এক বার ইট দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া ছাড়া ওই রাস্তা সংস্কারের কোনও কাজ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। নিত্যযাত্রীদের অফিস এবং স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়। দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। স্থানীয় রুকসানা বিবি, কামারুজ্জামান মোল্লা, ফতেমা বিবি, রত্না মণ্ডল, কবিতা সর্দারদের ক্ষোভ, ‘‘ভাঙা রাস্তার কারণে একটু রাত হলেই গাড়ি থাকে না। বেশি টাকা দিয়ে ভ্যান, অটো, রিকশা ভাড়া করতে হয়। কিন্তু ভাঙা রাস্তার ঝাঁকুনিতেই অনেকে অসুস্থ হয়ে যায়। কয়েকবার রাস্তায় প্রসবের ঘটনাও ঘটেছে।’’ স্থানীয় স্কুল পড়ুয়াদের কথায়, ‘‘জল, কাদা ভর্তি রাস্তা দিয়ে যেতে হলে পোশাক নোংরা হয়ে যায়। তাই আমরা বাড়তি পোশাক এবং গামছা নিয়ে বের হই।’’
ওই রাস্তা তৈরির আশ্বাস অবশ্য বার বার পেয়েছেন গ্রামবাসীরা। বেনা এবং চকপাটলি গ্রামের ছাত্তার মণ্ডল, মিজানুর রহমান, খালেক মণ্ডল, রাধাপদ দফাদারদের দাবি, পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা হয়ে বিধানসভা— প্রতিটি নির্বাচনের সময়েই নেতারা এসে ওই রাস্তা মেরামতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসক দলের মন্ত্রীরা এসে নতুন রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রেহেনা বিবি বলেন, ‘‘ওই ভাঙা রাস্তা নিয়ে স্থানীয় মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষুব্ধ। পঞ্চায়েতের পক্ষে অত বড় রাস্তা সারাইয়ের মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই। স্থানীয় সাংসদ ইদ্রিশ আলির কাছে কয়েকবার দরবার করেও সুরাহা হয়নি।’’ যদিও ইদ্রিশ আলির দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের পক্ষে জোর কদমে রাস্তা মেরামতির কাজ হচ্ছে। হাসনাবাদের ওই রাস্তার বিষয়ে আমাকে লিখিত ভাবে জানানো হলে দ্রুত টাকা বরাদ্দের চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy