Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kapil Muni Ashram

ধসে গিয়েছে পথ, সঙ্কটে কপিলমুনির মন্দির

সমুদ্রতটে দেখা দিয়েছে বড়সড় ধস। গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি মন্দিরের সোজাসুজি ২ নম্বর থেকে ৫ নম্বর সৈকত পর্যন্ত বেহাল অবস্থা। একাধিক বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয় হয়েছে এখানে।

ধসে গিয়েছে পথ।

ধসে গিয়েছে পথ। —নিজস্ব চিত্র।

সমরেশ মণ্ডল
সাগর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৭
Share: Save:

পূর্ণিমার কটালের জেরে কপিলমুনি মন্দির সংলগ্ন কংক্রিটের পথ ভেঙে গেল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি অস্থায়ী দোকান। সমুদ্রতটে দেখা দিয়েছে বড়সড় ধস। গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি মন্দিরের সোজাসুজি ২ নম্বর থেকে ৫ নম্বর সৈকত পর্যন্ত বেহাল অবস্থা। একাধিক বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয় হয়েছে এখানে। এর জেরে মন্দির থেকে সৈকতের দূরত্ব কমে এখন তা দাঁড়িয়েছে ৪৫০ মিটারের কাছাকাছি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার ভাঙন রোধের জন্য প্রায় পাঁচ বছর ধরে পরিকল্পনা করছে। ২০২৩ সালে গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর আগে মন্দিরের সামনে ভাঙন রুখতে সেচ দফতর প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে টেট্রাপড প্রকল্পের কাজ করেছিল। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই তা গ্রাস করে নেয় সমুদ্র। ফের মন্দির প্রাঙ্গণের কাছাকাছি সমুদ্রের ভাঙন আটকাতে ২০২৪ সালে গঙ্গাসাগর মেলার আগে কোটি টাকা খরচ করে পাইলট প্রকল্প করেছিল সেচ দফতর। কিন্তু তা-ও সফল হয়নি।

সমুদ্রতটে ১ ও ২ নম্বর স্নান ঘাট খারাপ থাকায়, পুণ্যার্থীরা ৩–৫ নম্বর স্নান ঘাট ব্যবহার করতেন। কিন্তু তা এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। প্রতি দিন যে সংখ্যক পুণ্যার্থী আসেন মন্দির দর্শনে, তাঁদের স্নানের জায়গা কোথায়?

কপিলমুনির প্রাচীন মন্দিরটি সমুদ্র গ্রাস করেছে অনেক বছর আগেই। নতুন মন্দিরের কাছাকাছি এগিয়ে আসছে সমুদ্র। মন্দিরের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সমুদ্রতট বরাবর ১ থেকে ৫ নম্বর রাস্তা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় সারিবদ্ধ ভাবে নারকেল গাছ বসিয়েছিল প্রশাসন। সম্প্রতি ভাঙনের কবলে পড়ে গাছগুলিও সমুদ্রগর্ভে চলে গিয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে গঙ্গাসাগরের ভাঙন ঠেকাতে গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ ও রাজ্যের পুর দফতর যৌথ ভাবে কাজ শুরু করে। ম্যাকিন্টোজ় বার্ন সংস্থাকে ক্ষয় আটকানোর পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বলা হয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে পরামর্শের পরে চেন্নাই আইআইটি-র দ্বারস্থ হয় রাজ্য। গঙ্গাসাগরের ভাঙন সমস্যা কী ভাবে মোকাবিলা করা যাবে, তার পরিকল্পনা করেন চেন্নাই আইআইটির বাস্তুকারেরা। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষও সংশ্লিষ্ট ভাঙনপ্রবণ এলাকার সমীক্ষায় সহযোগিতা করে। জলের তলার মাটি কী ভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, সেই রিপোর্টও তৈরি হয়। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।

ঠিক হয়, এর মধ্যে ৬৭ কোটি টাকা দেবে রাজ্য, বাকিটা দেবে কেন্দ্র। প্রকল্পের কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরুই হয়নি।

সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘ভাঙন রুখতে খসড়া তৈরি। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে সিআরজেড-এর অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারও এই প্রকল্পের জন্য টাকা দিতে চাইছে না। তাই কাজ শুরু করতে সমস্যা হচ্ছে। কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষে একা ১৪১ কোটি টাকা দিয়ে এই কাজ শুরু করা এখনই সম্ভব নয়।’’

জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘চেন্নাই আইআইটি যে সমীক্ষা করেছিল, তা পর্যালোচনা চলছে দ্রুত বাস্তবায়িত করার জন্য। ভাঙন রোধের জন্য ২৬ জুলাই উচ্চ পর্যায়ে এক কমিটি এলাকা পরিদর্শন করবে। তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kapil Muni Ashram Land Slide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy