যত্ন: ফের খুলছে স্কুল। চলছে সাফাই, স্যানিটাইজ়েশনে কাজ। নিজস্ব চিত্র।
করোনার জেরে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল স্কুল। সরকারি নির্দেশে অবশেষে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খুলছে। আপাতত নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে কী ভাবে স্কুল খোলা হবে, তার একটি নির্দেশিকা স্কুলগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে স্কুলগুলিতে।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুলে আসার সময়ে প্রতিটি ছাত্র, শিক্ষক, অস্থায়ী কর্মীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও ক্লাস ঘরে বেশি ছাত্রছাত্রী হয়ে গেলে তাদের জন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। এক সঙ্গে সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে প্রার্থনা সভায় হাজির থাকতেও নিষেধ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লাসরুমে ছাত্রছাত্রীদের পৃথক ভাবে প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও, স্কুলে নিয়মিত স্যানিটাইজ় করা, ক্লাসে ঢোকার আগে পড়ুয়াদের থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের কী করণীয়, সেই সংক্রান্ত সতর্কবার্তা ক্লাসগুলিতে টাঙিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু এ সব করতে গিয়ে যে টাকা খরচ হবে, তা কী ভাবে বহন করা হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তা নিয়ে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া, আমপানে বহু স্কুলের ক্ষতি হয়েছে। কোনও স্কুলের মিড ডে মিলের রান্নাঘর বা খাওয়ার ঘর ভেঙে পড়েছে। কোথাও আবার স্কুল ভবনের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রায় ৯৬৫টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। যার অধিকাংশই আমপানের কারণে কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় এখনও ক্ষতিগ্রস্ত অংশের সংস্কার হয়নি। জীবনতলার একটি স্কুলের ছাউনি উড়ে গিয়েছিল আমপানে। এখনও সেই ছাউনির সংস্কার হয়নি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “অন্যান্য ক্লাসরুমগুলিতে আপাতত ছাত্রছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস সংগঠনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক সঞ্জয় নস্কর বলেন, ‘‘আমপানে বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও বহু স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। স্কুল খোলার জন্য সরকারি যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে স্কুলে স্যানিটাইজ় করা-সহ নানা ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তার খরচ কোথা থেকে হবে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি। অনেক স্কুলেরই নিজস্ব তেমন কোনও ফান্ড নেই। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়েছেন।’’
তবে স্কুল খোলার খবরে সংস্কার শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। চলছে ক্লাসরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ। পাশাপাশি, সরকারি নির্দেশিকা মেনে শুরু হয়েছে স্যানিটাইজ় করার কাজও। কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের চারতলার উপরের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি উড়ে গিয়েছিল ঝড়ে। ওই ছাউনির নীচে পাঁচটি ল্যাবরেটরি ছিল। তা প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। স্কুল সূত্রে খবর, দ্রুত চারতলার ছাউনির কাজ শেষ করা হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘চারতলা ভবনের উপরের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেটা সারানো হয়েছে। আরও একটি নতুন ভবনের সোলার প্যানেল ঝড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে।’’ সংস্কারের কাজের জন্য কোনও সরকারি অর্থ আসেনি বলে জানান তিনি। দেবনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল দাস বলেন, ‘‘রবিবার থেকে স্কুল ভবন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি স্যানিটাইজ় করার কাজও চলছে।’’
জেলার ডিইও সুব্রত পালিত বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে স্কুল খোলার ব্যাপারে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোভিড-বিধি মেনে স্কুলগুলিকে স্যানিটাইজ় করার কথা বলা হয়েছে। যা খরচ হবে, জেলা থেকে স্কুলগুলিকে দিয়ে দেওয়া হবে।’’ (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy