প্রস্তুতি: ভাঙড়ের সাতুলিয়া হাই মাদ্রাসা খোলার আগে বৃহস্পতিবার অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক স্কুল কর্তৃপক্ষের। ছবি: সামসুল হুদা।
গোটা রাজ্যের সঙ্গে আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই জেলার বিভিন্ন স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে পঠনপাঠন শুরু করার জন্য প্রস্তুত বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রায় এক বছর পরে স্কুলে ফিরতে মুখিয়ে আছে পড়ুয়ারাও। অভিভাবকদের বড় অংশই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন। তবে সেই সঙ্গে বাবা-মায়েদের মধ্যে রয়েছে কিছুটা আশঙ্কাও। কোথাও কোথাও অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করা হচ্ছে অভিভাবকদের। দফায় দফায় স্যানিটাইজ়েশন, দূরত্ববিধি মেনে ক্লাসের ব্যবস্থা থাকছে বলে জানানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে অনেক স্কুলেই তৈরি রাখা হচ্ছে আইসোলেশন রুম, এমনকী অ্যাম্বুল্যান্সও।
ইতিমধ্যেই স্কুল শুরু নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ, সেখানে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে সম্মত হয়েছেন অধিকাংশ অভিভাবকই। ভাঙড় হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা শিবানী কর্মকার বলেন, ‘‘প্রায় এক বছর ধরে স্কুল বন্ধ। বাচ্চাদের লেখাপড়া মাথায় উঠেছে। টিউশন বন্ধ। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে নামমাত্র পড়াশোনা হয়েছে। স্কুল না খুললে মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে সিলেবাস শেষ হবে না। তাই আমরা চাই কোভিড-বিধি মেনে স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হোক।’’ কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণির পড়ুয়ার অভিভাবক মাধবী পাল বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানবে, সেটাই চিন্তার। তবে স্কুল খোলার খুবই প্রয়োজন ছিল।’’ সাগরের খানসাহেব আবাদ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শুভ্রনীল মহতার বাবা বিশ্বজিৎ বলেন, “এত দিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার খুব ক্ষতি হল। অনেক আগেই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। বাড়িতে থেকে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছিল না।’’ পোলেরহাট হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বাবা জুলফিকার মোল্লা বলেন, ‘‘সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এখনও পুরো সিলেবাস শেষ হয়নি। স্কুল খোলার পরে দ্রুত সিলেবাস শেষ না হলে বাচ্চারা সমস্যায় পড়বে। এখনও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তাই ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে কিছুটা ভয় লাগছে। তবে পরীক্ষার আগে সিলেবাস শেষ করার জন্য স্কুলে পাঠাতেই হবে।’’ অভিভাবকদের মধ্যে আশঙ্কা থাকলেও স্কুলে যেতে মুখিয়ে আছে পড়ুয়ারা। ভাঙড় হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ কর্মকার বলে, ‘‘দীর্ঘ দিন স্কুল, টিউশন বন্ধ। বাড়িতে থেকে পড়াশোনা ঠিক মতো হচ্ছিল না। স্কুল খুললে পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা হবে।’’ কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণির ছাত্র কৌশিক ঘোষ, তিতশা পালরাও স্কুলে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে বলে জানায়।
ভাঙড় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন হালদার জানান, প্রতিটি ক্লাসে যে পরিমাণ ছাত্রছাত্রী রয়েছে, সকলে এক সঙ্গে স্কুলে এলে কোভিড-বিধি মেনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা ছাত্রছাত্রীদের রোটেশন পদ্ধতিতে স্কুলে আসতে বলেছি এবং সেই মতো ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুলের গেট থেকে শুরু করে ক্লাসঘর বা শৌচাগার সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা থাকছে। ক্লাসে গিয়েও পরীক্ষা করা হবে। স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের শারীরিক দূরত্ব মেনে বসানোর জন্য পর্যাপ্ত ক্লাসঘর ও শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ সাগরের খানসাহেব আবাদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব দাস জানান, কোনও ছাত্রছাত্রীর জ্বর, সর্দি, কাশি হলে স্কুলে না পাঠাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ক্লাস চলাকালীন কোনও ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হলে তাদের জন্য আইসোলেশন রুম থাকছে। মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতির কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস নেওয়া হবে। অসুস্থ হলে আইসোলেশনে রাখার পাশাপাশি অ্যাম্বুল্যান্স মজুত থাকছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy