মাতৃক্রোড়ে: ছানাদের সঙ্গে মা। নিজস্ব চিত্র।
পথের পাশে শুয়ে দু’দিন ধরে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিল একটি কুকুর। এলাকার মানুষ ঘটনাটি দেখলেও, তেমন গুরুত্ব দেননি। পাশের গ্রামের এক যুবক খবর পেয়ে এগিয়ে এসে কুকুরটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেলন। শেষ পর্যন্ত চারটি বাচ্চা প্রসব করেছে কুকুরটি। সদ্যোজাত চারটি ছানা-সহ সুস্থ আছে মা-কুকুরটি। বাগদার নলডুগারি গ্রামের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নলডুগারি বাজারে রাস্তার পাশেই দু’দিন ধরে পড়েছিল কুকুরটি। প্রহ্লাদ মণ্ডল নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার বিষয়টি দেখেন। এর আগে এ ধরনের নানা কাজে তিনি এগিয়ে আসতে দেখেছেন সিন্দ্রাণীর বাসিন্দা সুজিত বিশ্বাসকে। রবিবার বিকেলে তাঁকেই ফোন করে বিষয়টি জানান প্রহ্লাদ। সঙ্গে সঙ্গে চলে আসেন সুজিত। এলাকার পশুচিকিৎসালয়ে যোগাযোগ করেন তিনি। কিন্তু রবিবার সেটি বন্ধ ছিল। এর পর বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুজিত।
অশেষবিক্রম দীর্ঘদিন ধরেই বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণ ও বিপন্ন প্রাণীদের পুনর্বাসনের কাজ করছেন। খবর পেয়ে তিনি লোক পাঠিয়ে কুকুরটির খোঁজ নেন। প্রাণিমিত্র চিকিৎসক জয়দীপ তরফদারকে পাঠানো হয় কুকুরটির চিকিৎসা করার জন্য। তিনি প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। স্বাভাবিকভাবেই রবিবার রাতে ১টি ও সোমবার সকালে আরও ৩টি ছানার জন্ম দেয় কুকুরটি।
অশেষবিক্রম বলেন, “ফোনে বিষয়টি শুনেই কুকুরটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। ডাক্তার পাঠিয়ে ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়। ওদের নজরে রাখা হবে।” প্রাণিমিত্র চিকিৎসক জয়দীপ তরফদার বলেন, “কুকুরটি প্রথমবার মা হল বলেই একটু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এখন মা ও বাচ্চারা সুস্থ আছে।’’
গ্রামের রাস্তার পাশে একটি বাড়ির উঠোনে খড় বিছিয়ে ছানা-সহ কুকুরটিকে আপাতত রাখা হয়েছে। তাদের দেখাশোনা করছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। সোমবার সকালে সুজিত গিয়ে কুকুরটিকে খাইয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বন্ধুরা মিলে চাঁদা তুলে একটা তহবিল তৈরি করছি। সেই টাকায় এলাকার পথকুকুরদের দেখাশোনা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। ছানা-সহ এই কুকুরটিকেও আমরাই দেখাশোনা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy