অভিযান: বন্ধ করা হল এই কারখানাই। ছবি: সামসুল হুদা।
বেআইনি অ্যাসিড তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের বৈরামপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রজাপতি দিন্দা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড়ের ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধ অ্যাসিড তৈরির কারবার চলছিল। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ডিএসপি ক্রাইম তমাল সরকার, ভাঙড় থানার ওসি সমরেশ ঘোষ ও ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) কর্মীদের নিয়ে ওই কারখানায় অভিযান চালানো হয়।
দেখা যায়, ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড তৈরি করা হচ্ছে। ফরেনসিক বিভাগের বিজ্ঞানী দেবাশিস সিংহ দাবি করেন, বেআইনি ভাবে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড তৈরি করা হচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে ক্লোরিন গ্যাসের সিলিন্ডার লিক হয় বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কী ভাবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে এ ধরনের বেআইনি কারবার চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এলাকার মানুষ।
এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশের এতে মদত আছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতা আসলাম ঘরামি। তিনি বলেন, ‘‘ভাঙড়ের ওই এলাকায় অ্যাসিড তৈরিই শুধু নয়, দীর্ঘ দিন ধরে নানা অনৈতিক কাজ চলছে। অবৈধ ভাবে চামড়ার ছাঁট জ্বালানোর ভাঁটি চলছে। তৃণমূলের মদতেই এই সমস্ত বেআইনি কারবার চলছে। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ সব বন্ধ করা।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘তৃণমূল এ সমস্ত বেআইনি কাজে মদত দেয় না। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা আমাদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এ সব বলছেন। যদি দলের কেউ এর পেছনে জড়িত থাকে, তা হলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। দল প্রশাসনের পাশে আছে।’’
এ দিন ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে ফরেনসিক বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। তমাল বলেন, ‘‘নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ এ বিষয়ে ভাঙড় ১ বিএমওএইচ অনিমেষ হোড় বলেন, ‘‘রাসায়নিক থেকে মানুষের ফুসফুসের অসুখ, চর্মরোগ থেকে শুরু করে নানা ধরনের অসুখ হতে পারে। এমনকী, ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার কথা এখনও সকলের মনে আছে। ক্লোরিন গ্যাস লিক হলে বহু মানুষের প্রাণহানি হতে পারে।’’
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হত এখানে তৈরি অ্যাসিড। ক্লোরিন গ্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিডের উপকরণ তৈরি করা হত। হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, মিউরিক অ্যাসিড তৈরি করা হত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy