Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নেশামুক্তি কেন্দ্রে হানা দিল পুলিশ, গ্রেফতার হলেন মালিক

গত শুক্রবার রাতে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে অভীক চৌধুরী (৩৭) নামে এক জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। কেন্দ্রের তরফে তাঁকে মধ্যমগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

সেই নেশামুক্তি কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

সেই নেশামুক্তি কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৪৮
Share: Save:

যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিককে গ্রেফতার করল মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রাজনাথ আমিন। রবিবার গ্রেফতারির পরে বারাসত আদালতে তোলা হলে তাঁকে আগামী তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ‘এথিক্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে নিউ ব্যারাকপুরের ওই নেশামুক্তি কেন্দ্র আপাতত বন্ধ করিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এ দিন সেখানে ফোন করলে এক ব্যক্তি ফোন ধরে বলেন, ‘‘আমরা এখানকার সিনিয়র রোগী। নতুন করে কাউকে আর এখানে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। কর্মকর্তারাও কেউ নেই।’’

গত শুক্রবার রাতে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে অভীক চৌধুরী (৩৭) নামে এক জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। কেন্দ্রের তরফে তাঁকে মধ্যমগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এর পরে মৃতদেহ হাসপাতালে ফেলে রেখেই নেশামুক্তি কেন্দ্রের লোকজন চলে যান বলে অভিযোগ। গভীর রাতে হাসপাতালে গিয়ে ছেলের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন অভীকের মা কৃষ্ণা চৌধুরী। তিনিই পরে মধ্যমগ্রাম থানায় ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করেন। কৃষ্ণাদেবীর কথায়, ‘‘অভীককে গত ৯ এপ্রিল নিয়ে যান ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের লোকজন। তার পর থেকে ছেলের সঙ্গে আমায় আর দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বারবার টাকা চাওয়া হয়েছে।’’ শুক্রবার সন্ধ্যায় ফোন করে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ছেলে অসুস্থ। দ্রুত চলে আসুন। হাসপাতালে গিয়ে তিনি অভীকের গায়ে মারধরের একাধিক চিহ্ন দেখেন বলেও দাবি করেছেন কৃষ্ণাদেবী।

শনিবার রাতে অভিযোগ দায়ের করার পরে কৃষ্ণাদেবীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেন মধ্যমগ্রাম থানার আধিকারিকেরা। তত ক্ষণে ময়নাতদন্তের পরে অভীকের মৃতদেহ নিয়ে মানিকতলার বাড়িতে চলে যান প্রতিবেশীরা। রাতে থানা থেকে কৃষ্ণাদেবী ফেরার পরে তাঁর মরদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কাগজপত্রে কিছু ভুল থাকায় ফের রাত আড়াইটে নাগাদ মধ্যমগ্রামে ছুটতে হয় কৃষ্ণাদেবীকে। রাত সাড়ে তিনটের পরে শেষকৃত্য হয় অভীকের।

রবিবার সকালেই ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে যাঁরা ভর্তি তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি আলাদা করে জেরা করা হয় নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিক রাজনাথকে। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। জানা গিয়েছে, গত সাত বছর ধরে চলছে এই নেশামুক্তি কেন্দ্রটি। শুক্রবার ঘটনার রাতে অভীক ছাড়াও সেখানে আরও কয়েক জন ভর্তি ছিলেন। তাঁদের পরিবারের লোকজনকে ডেকেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। গতকাল রাজনাথ বলেছিলেন, ‘‘অভীক মানসিক বিকারগ্রস্ত। ওঁর মায়ের অসহায় অবস্থা দেখেই ওঁকে ভর্তি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মানসিক রোগী আমরা নিই না।’’ তবে এ দিন আর নেশামুক্তি কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের তরফে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কৃষ্ণাদেবী এ দিন বলেন, ‘‘আমার ছেলের মৃত্যুর বিচার চাই। আমরা প্রয়োজনে মানবাধিকার কমিশনেরও দ্বারস্থ হব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police Raid Rehabilitation Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE