Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

প্রতারণার কারবার, ধৃত যুবক

স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয় শ্যামনগর হকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘আমাকেও ঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল ওই যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামনগর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০১:৫৫
Share: Save:

শুক্রবার দুপুর। সাদা একটি গাড়ি এসে দাঁড়াল স্টেশন-লাগোয়া একটি দোকানের বাইরে। গাড়ি থেকে নামল এক যুবক। দোকান থেকে কয়েকজন বেরিয়ে এসে যুবকটির সঙ্গে কথা শুরু করতেই হঠাৎ হাজির হন জনা কয়েক পুলিশ কর্মী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই যুবককে তোলা হল ভ্যানে। ওই যুবক যে গাড়িতে করে এসেছিল, সেই গাড়ির এক যাত্রী এবং চালককেও নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।

ঘটনাস্থল শ্যামনগর। জগদ্দল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম গৌতম মুখোপাধ্যায়। সোদপুরে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে সে। তার বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে। তার এক সঙ্গী এবং গাড়ির চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অনেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য হাতিয়ে ঋণ নিয়ে প্রচুর জিনিসপত্র কিনেছে গৌতম।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই প্রতারণার কারবার চালাচ্ছে গৌতম। শ্যামনগর ছাড়াও হুগলির চন্দননগরেও ঋণের টোপ ফেলে বহু লোকের টাকা হাতিয়েছে। শ্যামনগরে তার এক আত্মীয় থাকে। তার মাধ্যমেই বছরখানেক আগে সে শ্যামনগরেও কারবার ফাঁদে। শ্যামনগর স্টেশন এলাকায় ছোটখাট ব্যবসা চালান অতনু রায়। অতনু গৌতমের ওই আত্মীয়ের বন্ধু। গৌতম অতনুকে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। অতনুর কাছ থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত নথি জমা নেয়। আয়কর ফাইল বানিয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও ঋণ পাননি অতনু। অভিযোগ, বারবার চাওয়ার পরে টাকাও ফিরিয়ে দেয়নি গৌতম।

অতনুর মাধ্যমে গৌতমের সঙ্গে আলাপ হয় শ্যামনগর স্টেশনের ব্যবসায়ী জয় দাশগুপ্তের সঙ্গে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয় শ্যামনগর হকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘আমাকেও ঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল ওই যুবক। আমাদের যে অফিস রয়েছে, সেখানে প্রায়ই এসে বসত। সঙ্গে থাকত আরও কয়েকজন।’’ তিনি জানান, অনেক লোক এসে গৌতমের সঙ্গে দেখা করে কাগজপত্র জমা দিতেন। তবে তাঁর থেকে কোনও টাকা নেয়নি গৌতম, জানাচ্ছেন জয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঋণ দেওয়ার নামে সকলের কাছ থেকেই আগাম টাকা নিত গৌতম। যাঁরা এককালীন কয়েক হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে পারতেন না, তাঁদের ব্যাঙ্কের নথি জমা দিয়ে বিভিন্ন দোকান থেকে টিভি, রেফ্রিজারেটর, এসি কিনত গৌতম। পরে তা কম দামে কাউকে বেচে দিত। সে টাকা নিজেই হজম করত গৌতম। আর জিনিসপত্রের কিস্তি শোধ করতে হত ঋণগ্রহীতাকে। সেই বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই যুবক আশ্বাস দেয়, ঋণ পেলে সে কমিশনের টাকায় কিস্তি মেটাবে। কয়েকজনকে ঋণের কাগজ তৈরি করে ব্যাঙ্কের সিল মারা কাগজ দেয় গৌতম। ব্যাঙ্কে যেতেই জানা যায়, তা জাল। জয়কে অনেকে জানান সে কথা। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে শুক্রবার গৌতমকে ডাকা হয়। তৈরি ছিল পুলিশ। ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত যুবক।

অন্য বিষয়গুলি:

Money forgery Shyamnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE