Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হাসপাতাল নিয়ে আশায় গোবরডাঙা

দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করা নিয়ে বিতর্কের জেরেই ২৪ দিন আগে দলের নির্দেশে পদত্যাগ করেছিলেন সুভাষবাবু। জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে তদ্বির করেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, হাসপাতাল হবে না। তার পরেই শুরু হয় বিতর্ক।

স্বাগত: শপথ নেওয়ার পরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

স্বাগত: শপথ নেওয়ার পরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৪
Share: Save:

নতুন করে হাসপাতাল চালু নিয়ে সোমবার থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু করল গোবরডাঙা। কারণ, দলীয় নির্দেশে এ দিনই ফের পুরপ্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন তৃণমূলের সুভাষ দত্ত।

শহরবাসীর অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব যখন সুভাষবাবুকেই ফের পুরসভার দায়িত্ব দিয়েছেন, তখন হাসপাতাল চালু করা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চয়ই কোনও ভূমিকা নেবেন। সুভাষবাবু নিজেও বলেন, ‘‘হাসপাতালের বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওয়াকিবহাল। তিনি নিশ্চয় কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করা নিয়ে বিতর্কের জেরেই ২৪ দিন আগে দলের নির্দেশে পদত্যাগ করেছিলেন সুভাষবাবু। জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে তদ্বির করেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, হাসপাতাল হবে না। তার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। এলাকার মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

২০০০ সালে তৈরি হওয়া হাসপাতালটিতে প্রথম দিকে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা হতো। ছোটখাটো অস্ত্রোপচার বা সিজারের জন্য ভিড় লেগে থাকত। কিন্তু ২০১৪ সালে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে শুধু বহির্বিভাগে এক জন চিকিৎসক প্রতিদিন মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য বসছেন। বহু রোগীকেই যেতে হচ্ছে ১৪ কিলোমিটার দূরের হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

হাসপাতালটি পরিচালনা করে জেলা পরিষদ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তারা জানাচ্ছে, হাসপাতাল পরিচালনার মতো পরিকাঠামো তাদের নেই। সেটি যাতে স্বাস্থ্য দফতর নিজেদের হাতে নেয় এ জন্য ইতিমধ্যে আবেদনও করেছেন জেলা পরিষদ কর্তারা। হাসপাতালটি পুরোদমে চালু হলে গোবরডাঙা ও সংলগ্ন এলাকার অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।

গোবরডাঙা পুর উন্নয়ন পরিষদের সহ-সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় এবং ‘হাসপাতাল বাঁচাও কমিটি’র আহ্বায়ক বাপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালুর দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’ শীঘ্রই গোবরডাঙাবাসীকে নিয়ে নাগরিক কনভেনশনের আয়োজন করা হবে বলেও তাঁরা জানান।

সাধারণ মানুষ মনে করছেন, সুভাষবাবু দায়িত্বে ফিরে আসায় হাসপাতাল চালুর কাজে গতি আসবে। এ দিন পুরভবনে সুভাষবাবুকে শপথ-বাক্য পাঠ করান বারাসতের মহকুমাশাসক পীযূষকান্তি দাস। তার আগে দুপুরে জেলা তৃণমূলের চার নেতা— রতন ঘোষ, নীলিমেশ দাস, অজিত সাহা এবং গোবিন্দ দাস দলের তেরো জন কাউন্সিলরকে পুরপ্রধান হিসেবে সুভাষবাবুকে সমর্থন করার জন্য দলীয় নির্দেশের কথা জানিয়ে দেন। দুই নির্দল কাউন্সিলরও সুভাষবাবুকে সমর্থন করেন।

যদিও বিরোধীরা গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূলের নাটক দেখছেন। সিপিএম নেতা শঙ্কর নন্দী বলেন, ‘‘হাসপাতালের দাবিতে গড়ে ওঠা অন্দোলন থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে মুখ্যমন্ত্রী পুরপ্রধান নিয়ে নাটক করলেন।’’ তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের কটাক্ষকে আমল দিতে রাজি নয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE