Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Indian Railways

ঝাড়ু পড়ছে প্ল্যাটফর্মে, খুলছে দোকানপাটও

হাবড়া প্ল্যাটফর্মে চকোলেট-বিস্কুট-চানাচুরের দোকান সমীর কুণ্ডুর। স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে বলে মাসখানেক আগে দোকান খুলেছেন। আগে দিনে হাজার টাকার বিক্রি হত। এখন সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার।

ট্রেন চলাচল শুরু হবে শুনেই খুলতে শুরু করেছে প্ল্যাটফর্মের দোকান। হাবড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

ট্রেন চলাচল শুরু হবে শুনেই খুলতে শুরু করেছে প্ল্যাটফর্মের দোকান। হাবড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০৬:২২
Share: Save:

লম্বা লাঠির এক প্রান্তে বাঁধা ক্ষয়াটে চেহারার ঝাঁটাটি। সাত সকালে প্ল্যাটফর্মের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পরম যত্নে ঝাড় দিচ্ছিলেন তিনি। না, রেলের সাফাই কর্মী নন তিনি। তা হলে এমন কাজ বেছে নিলেন কেন? প্রৌঢ় রামমাধব পাসোয়ান বলছেন, “সাড়ে সাত মাস পরে আজ প্রথম দোকান খুলব। পরিষ্কারই ছিল প্ল্যাটফর্ম। তবুও একবার ঝাড় দিয়ে নিলাম। খুব ভাল লাগল।” স্টেশনের নাম কাঁচরাপাড়া।

কাঁচরাপাড়া স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ডালভাজা, মুড়ি-চানাচুরের দোকান রাম মাধবের। কর্মহীন হয়ে পেট চালাতে মাঝে রাস্তার ধারে আনাজ বেচেছেন। কিন্তু মন বসেনি, শিয়ালদহ মেন লাইনের ব্যস্ত এই স্টেশনেই কেটেছে প্রায় ৩০ বছর। কিন্তু ট্রেন তো চলবে সেই বুধবার! রাম মাধব বলছেন, “আর তর সইছে না। দু’-এক জন করে খদ্দের তো আসছে।”

শুধু কাঁচরাপাড়া নয়, বনগাঁ-হাসনাবাদ-ক্যানিং-ডায়মন্ড হারবার, সর্বত্রই লোকাল ট্রেন চালুর একই প্রস্তুতি ও আবেগ ধরা পড়ল বিভিন্ন স্টেশনে। সাড়ে সাত মাস প্রায় ফাঁকা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা স্টেশনগুলিতে যেন প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। ফেরিওয়ালা থেকে শুরু করে, স্টাফ স্পেশালে চড়ার যাত্রীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে নতুন টাইম টেবিল ঝোলানো হয়নি প্রায় কোনও স্টেশনেই। হাসনাবাদ স্টেশনে বিক্রেতারা দোকান খোলার প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

হাবড়া প্ল্যাটফর্মে চকোলেট-বিস্কুট-চানাচুরের দোকান সমীর কুণ্ডুর। স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে বলে মাসখানেক আগে দোকান খুলেছেন। আগে দিনে হাজার টাকার বিক্রি হত। এখন সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার। তাঁর চিন্তা বিক্রি নিয়ে। মাস্ক নামিয়ে রেখে বাইরের খাবার খাবেন তো? একই চিন্তা ছোলা-মুড়ি বিক্রেতা দোকান বিকাশ সাহার। দিন কয়েক আগে দোকান খুললেও আয় তেমন নেই। আশা বুধবার থেকে লোকাল ট্রেন চালু হলে আয় বাড়বে।

ট্রেনে জিনিসপত্র ফেরি করেন অনেকেই। সকালে বনগাঁ স্টেশনে এসে ভিড় করেছিলেন তাঁদের কয়েকজন। তাঁদের চিন্তা, ট্রেনে আদৌ তাঁরা উঠতে পারবেন তো! এখনও পর্যন্ত রেল এ নিয়ে কিছু ঘোষণা করেনি। তবে স্পেশাল ট্রেনে ধরতে স্টেশনে আসা যাত্রীরা ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন। এখানে স্টেশনের শৌচাগার সাফসুতরো করা হচ্ছে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা ক্যানিং। প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যেই স্টেশনের টিকিট কাউন্টার-প্ল্যাটফর্ম চত্বর সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। লোকাল ট্রেন চালু হবে বলে ডায়মন্ড হারবার লাইনের বিভিন্ন স্টেশনের সব ঘর খুলে পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কলকাতার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ভাল হলেও রেল পথে সময় এবং খরচ দুই কম লাগে বলে যাত্রী এবং ফেরিওয়ালারা আশায় বুক বাঁধছেন। রেল কিছু ঘোষণা করেনি বলে, এ দিন বেশ কিছু হকার স্টেশনে এসে আধিকারিকদের কাছ থেকে তা জানার চেষ্টা করেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy