Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Complain of Partiality

স্ট্যান্ডিং কমিটির নদীবাঁধ পরিদর্শনে প্রশ্ন বিরোধীদের

লোকসভা নির্বাচনের আগে সুন্দরবন বাঁচাতে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবনের দুর্বল নদীবাঁধগুলিকে কংক্রিট করা-সহ বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে সেই মাস্টার প্ল্যানে।

গোসাবার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এই রকম মাটির দুর্বল নদীবাঁধ।

গোসাবার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এই রকম মাটির দুর্বল নদীবাঁধ। ছবি প্রসেনজিৎ সাহা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোসাবা  শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ০৮:২৫
Share: Save:

বেহাল বাঁধ পরিদর্শন ঘিরে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠল বিধানসভার সেচ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সাগর, পাথরপ্রতিমা, নামখানার দুর্বল নদীবাঁধগুলি ঘুরে দেখেন ওই কমিটির সদস্যরা। সুন্দরবনের অন্যান্য উপকূল এলাকায় বাঁধ পরিদর্শন হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কমিটির তরফে অবশ্য পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানা হয়নি।

লোকসভা নির্বাচনের আগে সুন্দরবন বাঁচাতে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবনের দুর্বল নদীবাঁধগুলিকে কংক্রিট করা-সহ বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে সেই মাস্টার প্ল্যানে। নির্বাচন মিটতেই বিধায়কদের সুন্দরবনের দুর্বল বাঁধগুলি পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় নবান্নের তরফে। সেই নির্দেশ মতো ইতিমধ্যেই বিধানসভার সেচ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু উপকূল এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কমিটির চেয়ারম্যান তথা পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানার নেতৃত্বে সদস্যরা সাগর, পাথরপ্রতিমা, নামখানার বিভিন্ন এলাকায় যান।

স্ট্যান্ডিং কমিটির এই পরিদর্শন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। এসইউসি নেতা নিরঞ্জন নস্কর বলেন, “কমিটির চেয়ারম্যান এবং সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী কমিটির সদস্যদের দিয়ে কেবলমাত্র তাঁদের বিধানসভা এলাকায় বাঁধ পরিদর্শন করিয়েছেন। অথচ কুলতলি, রায়দিঘি, গোসাবা, বাসন্তী—এই সব এলাকার বাঁধের অবস্থা শোচনীয়। কমিটিতে থাকা এই সব এলাকার বিধায়কদের ভূমিকাও দুঃখজনক।” আরএসপি নেতা তথা প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির মতো নদী তীরবর্তী ব্লকগুলিতেও বাঁধ বেহাল। সেই এলাকা পরিদর্শন করলেন না স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। শুধুমাত্র পাথরপ্রতিমা, সাগর-সহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করলেন। জানি না তাঁরা আদৌ রিপোর্টে এই বিস্তীর্ণ এলাকার বাঁধের কথা উল্লেখ করেছেন কি না।” বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া ইনচার্জ সঞ্জয় নায়েক বলেন, “তেরো বছরে এই তৃণমূল সরকার সুন্দরবনের নদীবাঁধ কংক্রিটের করতে উদ্যোগী হয়নি। উল্টে কেন্দ্রের যে ৫০৩২ কোটি টাকা বাঁধ তৈরির জন্য এসেছিল, সেই টাকার ৮০ শতাংশই কাজ না হওয়ায় ফেরত চলে গিয়েছে।”

দীর্ঘদিন ধরেই সুন্দরবনের উপকূল এলাকার মানুষজন নদীবাঁধ ও জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে কংক্রিটের নদীবাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ, আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরাও স্ট্যান্ডিং কমিটির এই একপেশে পরিদর্শন নিয়ে হতাশ।

জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির কমিটির সদস্য চন্দন মাইতি বলেন, “আমরা বারবার দাবি তুলেছি, সুখা মরসুমে সুন্দরবনের নদীবাঁধ পরিদর্শন করে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরাও কার্যত বর্ষাতেই এলেন বাঁধ পরিদর্শনে। কিন্তু শুধু সাগর, পাথরপ্রতিমা এলাকা পরিদর্শন করলেন, সুন্দরবনের এই বিস্তীর্ণ এলাকায় এলেন না।”

বিধায়ক সমীরের দাবি, “মাস সাতেক আগেই সুন্দরবনের গোসাবা-সহ হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছি। এ ছাড়া পাথরপ্রতিমায় কমিটির মিটিংয়ে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। সেখানে সুন্দরবন এলাকার সার্বিক বাঁধ নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সমস্ত ব্লকে যে যে এলাকার বাঁধ খারাপ রয়েছে, সেখানে দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

gosaba
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy