Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
matador

ইটবোঝাই মিনিট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

শনিবার সকালে ইট-বোঝাই মিনি ট্রাকের ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যুকে ঘিরে ফের একই অভিযোগ উঠল অশোকনগরে। রাস্তার পাশ থেকে ইমারতি মালপত্র সরাতে পদক্ষেপ করার দাবিতে দেহ আটকে রাখেন এলাকার মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:৪৬
Share: Save:

রাস্তা দখল করে বা রাস্তার পাশে ইমারতি মালপত্র ডাঁই করে রাখার ফলে বার বারই দুর্ঘটনা ঘটে বহু এলাকায়। বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে কোথাও কোথাও ব্যবস্থা নেয় পুলিশ-প্রশাসন। বহু জায়গায় সমস্যা একই থেকে যায়।

শনিবার সকালে ইট-বোঝাই মিনি ট্রাকের ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যুকে ঘিরে ফের একই অভিযোগ উঠল অশোকনগরে। রাস্তার পাশ থেকে ইমারতি মালপত্র সরাতে পদক্ষেপ করার দাবিতে দেহ আটকে রাখেন এলাকার মানুষ।

অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার কল্যাণগড় বাজার এলাকায় দুর্ঘটনায় মৃতের নাম চন্দন দেব (৭৩)। বাড়ি উঁচু কয়াডাঙা এলাকায়। দুর্ঘটনার পর ক্ষিপ্ত জনতা ছোট ট্রাকে হামলা চালায়। ট্রাকের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে লোকজন দেহ আনতে বাধা দেন। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা দাবি জানান, আগে সড়ক থেকে ইমারতি মালপত্র সরাতে হবে। থানার ওসি সিদ্ধার্থশঙ্কর মণ্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের ইমারতি মালপত্র সরানোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন। সড়কে থাকা মালপত্র সরানোর কাজ শুরু করে পুলিশ। পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকারও এলাকায় গিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ছোট ট্রাকটি আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বসিরহাট থেকে ট্রাকে ইট আনা হয়েছিল কল্যাণগড় বাজার এলাকায়। অভিযোগ, ট্রাকটি সড়কে দাঁড়িয়েছিল ইট নামানোর জন্য। আচমকা, ছোট ট্রাকটি পিছনের দিকে চলে আসে। ধাক্কা মারে বৃদ্ধকে। তাঁর দেহ চাকার তলায় চলে যায়। চন্দন লটারির টিকিট বিক্রি করতেন। এ দিনও টিকিট বিক্রি করতেই বেরিয়েছিলেন।

বাসিন্দাদের বক্তব্য, এখানে রাস্তা দখল করে ইমারতি মালপত্র ফেলে রাখা অনেক বছর ধরে। এর ফলে মাঝে মধ্যেই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। কল্যাণগড় বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে দু’টি হাইস্কুল। কল্যাণগড় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রাবণী রায় পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন, ইমারতি মালপত্র সরানোর জন্য। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘স্কুলের প্রবেশ পথের কাছে দু’পাশে ইমারতি মালপত্র ফেলে রাখা হয় অনেক বছর ধরে। এই অবস্থায় বিপজ্জনক ভাবে যানবাহন চলাচল করে। ছাত্রীরা যারা হেঁটে বা সাইকেলে স্কুলে আসে, তাদের বিপদের ঝুঁকি থাকে। ইমারতি মালপত্র রাখার কারণে স্কুলে পাঁচিল দেখা যায় না।’’ কয়েক বছর আগে এ নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন বাসিন্দারা। কয়েক দিন ইমারতি দ্রব্য ফেলা বন্ধ ছিল। ফের পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নির্মলকান্তি দাস বলেন, ‘‘কুড়ি-পঁচিশ বছর ধরে রাস্তার পাশে ইমারতি দ্রব্য ফেলে ব্যবসা করা হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকবার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি। শুক্রবার থেকে খুলেছে স্কুল। পড়ুয়াদের যাতায়াত বেড়েছে। আশপাশের কয়েকটি এলাকার মানুষও এই পথ ব্যবহার করেন। আমাদের দাবি দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।’’

কল্যাণগড় বাজার এলাকা ছাড়াও শহরের অন্যত্রও কোথাও সড়কের উপরে, কোথাও পাশে ডাঁই করে রাখা হয় ইট-বালি-পাথর। দুর্ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ।

ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। শহরবাসীর বক্তব্য, পুলিশ, পুরসভা ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে এই কাণ্ড ঘটছে। শহরবাসীর একাংশ নিজেদের প্রয়োজনেও অনেক সময়ে ইমারতি মালপত্র বাড়ির সামনে রাস্তায় রেখে দেন। ব্যবসায়ীরাও মালপত্র রাস্তার পাশে রেখে কারবার চালান। ইমারতি মালপত্র পড়ে থাকায় রাস্তায় ধুলো ওড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত কল্যাণগড় বাজার এলাকায় সড়ক থেকে ইমারতি মালপত্র মুক্ত করা হবে। পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘সাত দিনের মধ্যে কল্যাণগড় বাজার এলাকা থেকে মালপত্র সরানো হবে। শহরের বাকি এলাকা থেকেও দ্রুত ইমারতি মালপত্র সরাতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident matador
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy