মাতৃভূমি লোকাল। ক্যানিং স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
শুরু শুরুতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আঁটোসাঁটো। কিন্তু গত কয়েক বছরে ক্রমশ মাতৃভূমি লোকালে সেই ব্যবস্থা ঢিলেঢালা হতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। সে কারণেই শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় মাতৃভূমি লোকালে মাঝে মধ্যেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে মাতৃভূমি লোকালে।
সোমবার সন্ধ্যায় ডাউন শিয়ালদহ ক্যানিং মাতৃভূমি লোকালে ইসমাইল সর্দার নামে এক ব্যক্তি মহিলাদের ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে তাঁদের মারধর করে। ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেয়। এই ঘটনায় শম্পা অধিকারী নামে এক মহিলা জখম হন। পরে রেল পুলিশ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে।
ক্যানিং স্টেশন থেকে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ে মাতৃভূমি লোকাল। শিয়ালদহ থেকে ছাড়ে সন্ধে ৬টা ২০ মিনিটে। বহু মহিলা নিয়মিত যাতায়াত করেন এই ট্রেনে। সোমবার মাতৃভূমি লোকালের যে কামরায় ইসমাইল চড়াও হয়েছিল, সেখানে থাকা কয়েক জন মহিলা যাত্রী জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে কামরায় পুলিশকর্মী ছিলেন না।
মঙ্গলবারও ডাউন শিয়ালদহ ক্যানিং মাতৃভূমি লোকালের ৩ নম্বর কামরায় উঠে দেখা মেলেনি রেল পুলিশের। এই কামরায় প্রতিদিন যাতায়াত করেন ক্যানিংয়ের বাসিন্দা, বেসরকারি সংস্থার কর্মী অঞ্জলি দাস। তিনি বলেন, “সোমবারের ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। কিন্তু ঘটনার পর আজও এই কামরায় কোনও পুলিশ কর্মীর দেখা পেলাম না।’’ সল্টলেক সেক্টর ফাইভে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী বিশাখা রায় সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এই ট্রেনে গড়িয়া স্টেশন থেকে ক্যানিংয়ে ফেরেন। তাঁর কথায়, “মাতৃভূমি লোকালে রেলপুলিশ থাকে ঠিকই, কিন্তু প্রতিটা কামরায় থাকে না। সামনের দিকে মহিলা কামরায় দু’একজন মহিলা পুলিশ ও পিছনের কামরায় দু’একজনকে দেখা যায়। মাঝের কামরাগুলিতে সাধারণত কোনও পুলিশ থাকেন না। দু’চারজন পুলিশ কর্মীর পক্ষে গোটা ট্রেনে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।’’
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা মাতৃভূমি লোকালে চারজন আরপিএফ থাকেন। তিনজন মহিলা ও একজন পুরুষ কনস্টেবলের দায়িত্বে ট্রেনটি শিয়ালদহ থেকে ক্যানিংয়ের মধ্যে যাতায়াত করে। বারো কামরার ট্রেনে মাত্র চার জন পুলিশকর্মীর পক্ষে যে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়, তা মানছেন রেল পুলিশের আধিকারিকেরাও। সোনারপুর জিআরপির দাবি, আরপিএফ ছাড়াও প্রতিদিন মাতৃভূমি লোকালে বেশ কিছু জিআরপি ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিরাপত্তার বিষয়টি সামলান। সোনারপুর আরপিএফের এক সাব ইন্সপেক্টর বলেন, “সন্ধ্যার পর থেকে প্রায় প্রতিটি ট্রেনের মহিলা কামরায় পুলিশকর্মীরা ডিউটি করেন। মাতৃভূমি লোকালে জিআরপি ও আরপিএফ কিছু সিভিক ভলান্টিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন।’’এ বিষয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তীর দাবি, “যাত্রীদের সুরক্ষার দিকটি সব সময়েই গুরুত্ব দিয়ে
দেখা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy