এখানেই সেতুর দাবি উঠেছে। ছবি: সামসুল হুদা।
বাম সরকার বদলেছে। দু’দফায় ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূলও। কিন্তু মাতলা নদীর উপরে এখনও সেতু পেল না ক্যানিং।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার মাতলা নদীর উপরে ক্যানিং এবং মৌখালি সংযোগকারী সেতু তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। বাম আমলে এই নিয়ে শুধু আশ্বাস মিলেছিল। তৃণমূল আমলেও অবস্থার বদল হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ। ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, ‘‘সেতু তৈরির বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে খোঁজ নেব।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সেতুটি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিং-১ ও ২ ব্লক সংযোগকারী ওই সেতু হয়ে গেলে উপকৃত হবেন মহকুমার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা-সহ গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ, হাড়োয়া, ধামাখালি, সন্দেশখালি ব্লকের মানুষ। সড়কপথে সুন্দরবনের সঙ্গে জীবনতলা হয়ে কলকাতার যোগাযোগ দ্রুত হবে। ক্যানিং থেকে বারুইপুর এবং সোনারপুরে যাতায়াতের সময়ও কমে যাবে। মাতলা নদীর অন্য দিকে ক্যানিং-বাসন্তী সংযোগকারী অন্য একটি সেতু থাকলেও সেটি দিয়ে কলকাতা আসতে অনেক সময় লাগে। তাই এই দ্বিতীয় সেতুর দাবি উঠছে।
শুধু যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতিই নয়, ক্যানিং-মৌখালি সেতুটি হলে এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কারণ, সেতু হয়ে গেলে মাতলা নদীর চরে ইকো ট্যুরিজম, পিকনিক স্পট তৈরির সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ওই চরে কয়েকটি মেছোভেড়ি রয়েছে। অতীতে ওই মেছোভেড়িগুলির দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মাতলা নদীতে এখন জল নেই বললেই চলে। তাই সেই মেছোভেড়ির ব্যবসা এখন বন্ধের মুখে। প্রস্তাবিত সেতু তৈরি করে মাতলার চরে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দাবি আছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
মুজিবর মোল্লা, হবিবর মোল্লাদের ক্ষোভ, ‘‘বাম আমল থেকেই শুনে আসছি ক্যানিং-মৌখালি সেতু তৈরি হবে। কয়েক বার মাপজোকও হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও কাজ শুরু হল না। প্রশাসন শুধুই আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে।’’
ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘সেতুটি তৈরির জন্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর ওই সেতু তৈরি করতে রাজি হয়েছে। ৪০০ মিটারের ওই সেতু তৈরি করতে ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জেনেছি।’’ সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার দাবি, শুধু ক্যানিং-মৌখালি সেতু নয়, সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় আরও কয়েকটি সেতু তৈরি হবে। এ জন্য টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে।
আপাতত এই আশ্বাসটুকুই ভরসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy