মতুয়া ধর্ম মহামেলা শুধুমাত্র কামনাসাগরে পুণ্যস্নান নয়, বিকল্প অর্থ রোজগারেরও মাধ্যম।
গোপালনগরের বাসিন্দা শ্যামল দাস এ বার মহামেলায় ডাঙ্কা বিক্রি করছেন। প্রত্যেক বছরই তিনি এখানে দোকান দেন। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘এ বার ছোট বড় মিলিয়ে সাতশোটি ডাঙ্কা এনেছিলাম। সবই বিক্রির মুখে।’’ দাম ১৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত। শ্যামলবাবু জানান, এখান থেকে সারা বছরের আয় হয়। তাই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন তিনি।
শুধু শ্যামলবাবু নন, গাইঘাটা-সহ জেলার বহু মানুষ ওই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। এই মেলার মাধ্যমেই বিকল্প রোজগারের পথ খুঁজে নিয়েছেন অনেকেই। মেলা চত্বর ছাড়াও গোটা ঠাকুরনগর এলাকা জুড়েই এখন বসে গিয়েছে কয়েক হাজার দোকান। হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে হাজির হন বিভিন্ন জেলা, এমনকী ভিন রাজ্যের ব্যবসায়ীরাও।
মেলায় বিক্রি হচ্ছে মতুয়া ধর্মের বই, ক্যাসেট, সঙ্গে রয়েছে হরিচাঁদ ঠাকুরের ছবি দেওয়া গেঞ্জি। রয়েছে ঘুগনি, গজা, জিলিপি, আইসক্রিম, ফুচকা, জুতোর স্টল। ডঙ্কা, পিতলের বাসন, বাঁশি, গামছা, ধুতি, ডিম, চায়ের দোকানও রাশি রাশি। কাস্তে, কোদাল, ছুরি-বঁটির দোকান দিয়েছেন সাধন কর্মকার নামে এক ব্যক্তি। তাঁর এই পসরা নিয়ে সাধনবাবু বিভিন্ন মেলায় যান। তিনি বলেন, ‘‘অন্য মেলার থেকে এখানে মানুষের ভিড় বেশি। বেচাকেনা ভাল হয়।’’ হরিচাঁদ ঠাকুরের ছবি ও পুজোর বাসনের স্টল দিয়েছেন হাবরার শিবশঙ্কর দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেক বছরই এখানে দোকান দিয়ে থাকি। বছরের সব থেকে বেশি আয় এই মেলা থেকেই করি।’’ হরিচাঁদ ঠাকুরের ছবি লাগানো গেঞ্জি বিক্রি করছেন এক মহিলা। দোকানে ভিড় উপচে পড়েছে। মহিলা জানান, এ বার এই গেঞ্জিগুলি ভালই বিক্রি হল। এই মেলার জন্যই বাড়তি টাকার মুখ দেখতে পায় পরিবার।
গাইঘাটা কৃষি প্রধান এলাকা। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগের বৃষ্টিতে এখানকার খেত জলের তলায় চলে যায়। চাষিরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। মেলাতে অনেকে দোকান দিয়ে সেই ক্ষতি সামালানোর চেষ্টা করেন।
মেলাকে ঘিরে উপার্জনের উপায় মেলে স্থানীয়দেরও। এই সময়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বাড়িতে মোটর বাইক, সাইকেলের অস্থায়ী গ্যারেজ তৈরি করে বাড়তি রোজগার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy