এ বার বেপরোয়া ডাম্পার স্কুটারে ধাক্কা মেরে স্কুটারচালককে ছেঁচড়ে নিয়ে গেল বেশ কিছুটা। মধ্যমগ্রামে শুক্রবার রাতে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় কার্যত স্ত্রী ও সন্তানের চোখের সামনেই মৃত্যু হয় ওই স্কুটারচালকের। ঘটনার পরে রাতের যশোর রোডে যানবাহন, বিশেষত লরি ও ডাম্পারের বেপরোয়া চলাচল ঠেকাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত এক মাসে বিমানবন্দর এলাকা এবং বারাসতের মধ্যে যশোর রোডে দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছ’টি ঘটনাই ঘটেছে বিমানবন্দর থানা এলাকার। শুক্রবার রাতের ঘটনাটি ঘটে মধ্যমগ্রাম থানা এলাকায়। মৃত স্কুটারচালকের নাম সৌমেন পাল (৩৮)। স্ত্রী সুস্মিতা ও একমাত্র সন্তান সৌরদীপকে নিয়ে তিনি বারাসতের দিক থেকে স্কুটারে চেপে বিরাটিতে তাঁর বাড়িতে ফিরছিলেন। মধ্যমগ্রামের মেঘদূত এলাকায় ওই ডাম্পারটি বেপরোয়া গতিতে এসে স্কুটারে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। যার জেরে সৌমেনের স্ত্রী ও পুত্র দু’দিকে ছিটকে পড়েন। সৌমেন ডাম্পারের চাকার সঙ্গে জড়িয়ে যান। অভিযোগ, ডাম্পারের চালক পালাতে গিয়ে সৌমেনকে প্রায় ৩০০ মিটার ছেঁচড়ে নিয়ে যায়। পথচারী ও স্থানীয়েরা ডাম্পারটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। চালক প্রথমে পালালেও পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন জনকেই উদ্ধার করে মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সৌমেনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে চিকিৎসার জন্য বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রাত কিছুটা বাড়লেই বেপরোয়া গতির গাড়ির জেরে যশোর রোড কার্যত মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়। রাতের যশোর রোডে যানবাহনের বেপরোয়া গতিতে রাশ টানার ক্ষেত্রে থানা এবং ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারির অভাব রয়েছে বলেই অভিযোগ করছেন স্থানীয় লোকজন। দিনকয়েক আগেই এল-২৩৮ রুটের একটি বাসের সঙ্গে ক্রেনের সংঘর্ষে কয়েক জন বাসযাত্রী জখম হন। সেই দুর্ঘটনাটিও মধ্যমগ্রামে যশোর রোডে ঘটেছিল।
বিরাটির শিবাচল এলাকায় বাড়ি সৌমেনের। বেসরকারি সংস্থার কর্মী ওই ব্যক্তি শুক্রবার সপরিবার বারাসতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে বারাসতের একটি শপিং মলে কেনাকাটাও সারেন। বাড়ি ফেরার পথে ঘটে দুর্ঘটনা। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বারাসত পুলিশ জেলাও। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখরিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে রাতের দিকে লরি জাতীয় যানবাহন চলায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা ভাবছি আমরা। হেলমেট-বিধিও কঠোর ভাবে বলবৎ করা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)