Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

তারের বেড়ার ওপার থেকে এল পুজোর ডালি

প্রতিবার পেট্রাপোল সীমান্তে ঘটা করে আয়োজন করা হয় মনসা পুজোর। যা এখন দুই বাংলার মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে দীপক ঘোষ, অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘১৯৮৪ সাল থেকে এখানে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। শোনা যায়, এক বিএসএফ কর্তাকে মা মনসা স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন।

ভোজন: পেট্রাপোলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ভোজন: পেট্রাপোলে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৪০
Share: Save:

পুজোর ডালি হাতে নিয়ে কাঁটাতারের ওপারে অপেক্ষা করছিলেন জনা কয়েক মহিলা। এ দিকে সীমান্তের দু’পারে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বেনাপোল ও পেট্রাপোলের বিজিবি ও বিএসএফের জওয়ানেরা।

পেট্রাপোলে মনসা পুজো দেওয়ার জন্য এমন ভাবেই প্রত্যেক বছর অপেক্ষা করেন বাংলাদেশের মানুষ। পুজো উদ্যোক্তারা গিয়ে তাঁদের হাত থেকে পুজোর ডালি নিয়ে আসেন। সেই ডালি পৌঁছে যায় মনসা মন্দিরে। পুজো শেষে একই ভাবে তাঁদের প্রসাদ পৌঁছে দেওয়া হয়। খিচুড়ি ভোগও মেলে।

প্রতিবার পেট্রাপোল সীমান্তে ঘটা করে আয়োজন করা হয় মনসা পুজোর। যা এখন দুই বাংলার মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে দীপক ঘোষ, অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘১৯৮৪ সাল থেকে এখানে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। শোনা যায়, এক বিএসএফ কর্তাকে মা মনসা স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই পুজো শুরু হয়।’’ হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই পুজোর আয়োজনে সহযোগিতা করেন বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।

তবে এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অতীতে বিএসএফ ও বিজিবি (পূর্বতন বিডিআর) এত কড়াকড়ি করত না। তখন ওপার বাংলার মানুষ সরাসরি এসে এখানে পুজো দিতেন। এখন কড়াকড়ির কারণে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আসা যায় না। কিন্তু পুজোতে সামিল হন বাংলাদেশিরাও। মাইকে ঘোষণা শুনে তাঁরা বুঝতে পারেন পুজো শুরু হয়েছে। অঞ্জলি দেওয়া চলছে। ওপারে দাঁড়িয়েই তাঁরা দু’হাত জোড় করে দেবীকে প্রণাম করেন।

পেট্রাপোল সীমান্তের বিএসএফ ক্যাম্পের পিছনেই মনসা মন্দির। মন্দিরের পিছন দিয়ে বয়ে গিয়েছে হাকোর খাল। খালের ও পাড়ে বাংলাদেশের সাদিপুর গ্রাম। মন্দিরের ডান দিকে বেনাপোল। এ দিন সীমান্তে গিয়ে দেখা গেল, খালের ওপারে সাদিপুর ও বেনাপোলে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। দূর থেকেই পুজো দেখছেন তাঁরা। হাবরা থেকে এক মহিলা ছোট ছেলেকে নিয়ে পুজো দেখতে এসেছিলেন। ওপারের এক মহিলাকে দেখে চেঁচিয়ে ডাকলেন। কাঁটাতারের দু’পারে দাঁড়িয়ে কথা হল দু’জনের। জানা গেল, মহিলার বাপের বাড়ি আর শ্বশুরের ভিটের মাঝে এখন কাঁটাতারের বেড়া। পুজো উপলক্ষে পরিজনদের দেখতে এসেছিলেন তিনি। পুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজন হয়। ঘাসের উপরে বসে চলে খিচুড়ি খাওয়া। শিবানী বসু নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘মনে হচ্ছে বনভোজনে এসেছি।’’ বহু মুসলিম মানুষকেও প্রসাদ নিতে দেখা গেল এ দিন। সব মিলিয়ে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছল কাঁটাতারের এপার-ওপারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Petrapole Manasa Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy