Advertisement
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Death

কোভিডে মৃত মায়ের দেহ ১০ ঘণ্টা আগলে বসে ছেলে

পানিহাটির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ নগরের বাসিন্দা রমা মুখোপাধ্যায় কিছু দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছিলেন।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২১ ০৬:১৯
Share: Save:

হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছিল কোভিড আক্রান্ত প্রৌঢ়ার। তার পর থেকে প্রায় ১০ ঘণ্টা ঘরেই মায়ের দেহ আগলে বসে রইলেন ছেলে। অভিযোগ, পরিচিত কয়েক জনকে বিষয়টি জানালেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। যদিও স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা খবর পাওয়া মাত্র দেহটি উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে পানিহাটিতে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পানিহাটির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ নগরের বাসিন্দা রমা মুখোপাধ্যায় কিছু দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছিলেন। গত ১৫ মে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রমাদেবীর ছেলে অভির দাবি, মায়ের কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট আসার পরে তিনি কয়েক জন প্রতিবেশীকে সব জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু কেউ সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেননি। প্রতিবেশীদের অবশ্য দাবি, ওই যুবক আগে থেকে কাউকেই কিছু জানাননি।

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে অ্যাম্বুল্যান্স আসার পরে জানা যায়, রমাদেবী করোনা পজ়িটিভ এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। অভি বলেন, ‘‘জ্বর ছাড়া মায়ের আর কোনও সমস্যা ছিল না। আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মা মারা যান।’’ এর পরে মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন অভি। সে দিন রাত দেড়টা থেকে রামকৃষ্ণ নগরের বাড়িতেই পড়ে ছিল প্রৌঢ়ার মৃতদেহ।

রমাদেবীর পাশের বাড়ির বাসিন্দা সুস্মিতা সাহা জানান, বুধবার সকালে তাঁদের ডেকে বিষয়টি জানিয়ে সহযোগিতা চান অভি। সুস্মিতা বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতেও বয়স্ক মানুষ আছেন। তাই পাশের বাড়িতে মৃতদেহ পড়ে থাকায় একটু ভয়ই লাগছিল। ওই যুবক আমাদের জানিয়ে সহযোগিতা চাওয়ার পরে আমরাও সকলকে জানাই।’’ খবর পেয়ে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যেরা চলে আসেন। ওই যুবক কেন মঙ্গলবার রাতেই মায়ের মৃত্যুর খবর কাউকে জানাননি, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। যদিও অভির দাবি, মায়ের মৃত্যুর খবর এক প্রতিবেশীকে রাতে জানালেও তিনি কিছু করেননি।

পানিহাটি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সোমনাথ দে বলেন, ‘‘প্রৌঢ়ার ছেলে আমাদেরও কোনও খবর দেননি। ঘটনাটি আগে জানতে পারলে মঙ্গলবার রাতেই দেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা করা যেত। তবে যখন বিষয়টি জানা গিয়েছে, তার পরে আর ফেলে রাখা হয়নি।’’ এ দিন খবর পেয়ে পানিহাটি পুরসভার কর্মীরা গিয়ে প্রৌঢ়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্মশানে নিয়ে আসেন। সোমনাথবাবু জানান, সন্ধ্যার পরে করোনা মৃতদেহ দাহ শুরু হলে ওই প্রৌঢ়ার অন্ত্যেষ্টি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Corona Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE