Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অঙ্কের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে অঞ্জনা

বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় অঞ্জনা। অঙ্কের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু অভাবের সংসারে স্বপ্নপূরণের লড়াইটা সহজ না, জানেন মা-মেয়ে।

দায়িত্ব: বিড়ি বাঁধছে অঞ্জনাও। নিজস্ব চিত্র

দায়িত্ব: বিড়ি বাঁধছে অঞ্জনাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৬
Share: Save:

বিড়ি বেঁধে একলা হাতে ছেলেমেয়েদের বড় করছেন মা। সেই পরিবারেরই মেয়ে অঞ্জনা দাস এ বার মাধ্যমিকে ৫২৮ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মা নমিতার সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজে হাত লাগায় মেয়ে। হিঙ্গলগঞ্জ থানার কনকনগর গ্রামে নমিতারা থাকেন টালির চালের ঘুপচি ঘরে। আমপান ঝড়ে টালির চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নমিতা জানান, সংসারের কাজ সেরে রাত জেগে সপ্তাহে কয়েক হাজার বিড়ি বাঁধতে পারেন তিনি। তাতে জোটে মাত্র ৪০০ টাকা।

বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় অঞ্জনা। অঙ্কের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু অভাবের সংসারে স্বপ্নপূরণের লড়াইটা সহজ না, জানেন মা-মেয়ে। অঞ্জনা বলে, ‘‘মায়ের পরিশ্রম দেখে ঠিক করি, মাধ্যমিকে ভাল ফল করতেই হবে। পড়াশোনা করে মায়ের পাশে দাঁড়াতে চাই। কিন্তু কী ভাবে পড়াশোনা চালাব জানি না।’’ সে আরও বলে, ‘‘সংসারের যা অবস্থা, তাতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়া হবে কিনা জানি না। মনে হয় কলা বিভাগেই ভর্তি হতে হব।’’ স্কুলের শিক্ষকেরা বরাবর পাশে থেকেছেন। বই, খাতা-সহ পড়াশোনার জিনিসপত্র কিনে তাকে সাহায্য করেছেন। এ ছাড়া স্কুলের ভর্তির ফি মুকুব করা হত অঞ্জনার। গৃহশিক্ষকেরাও অনেকে টাকা নিতেন না। সেই সঙ্গে অঞ্জনাও নিজের পড়ার পাশাপাশি তার প্রিয় বিষয় অঙ্ক বাড়ির আশেপাশের পড়ুয়াদের বিনা পারিশ্রমিকে করায়। অঞ্জনা কনকনগর এসডি ইন্সটিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। অঞ্জনা পরীক্ষার পর মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু করেছে। দিনে প্রায় ২০০ বিড়ি বেঁধে ৩৪ টাকা আয় করে।

নমিতা বলেন, “আমি পড়াশোনায় ভাল থাকলেও মাধ্যমিকের পরে পড়তে পারিনি। বাবা বিয়ে দিয়ে দেন। তবে যত কষ্টই হোক, মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করাতে চাই।’’

অঞ্জনার স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বলেন, “আমরা সব রকম ভাবে অঞ্জনার পাশে আছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

madhyamik exam 2020 teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy