জমজমাট: কলেজ ক্যাম্পাসে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র
ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছের গুঁড়িতে বসে শুরু হয়েছিল আড্ডাটা। অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের কথাবার্তায় হাসিঠাট্টার মাঝেও উঠে এল দেশের নানা সমস্যার কথা।
ভোটের অনেক দিন আগেই গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পড়ায় সন্তুষ্ট শোনাল কৃশানু মণ্ডলের কথা। বললেন, ‘‘প্রথম বার ভোট দেব। নিজের ভোটটা যেন নিজে দিতে পারি, সেই চিন্তা ছিল। বড়দের মুখে শুনতাম, অনেকেই নাকি লাইনে দাঁড়িয়েও দেখতেন, তাঁর ভোটটা আগেভাগে পড়ে গিয়েছে। এ বার মনে হচ্ছে না তেমন কিছু হবে।’’
ইন্দিরা গিরি: আমাদের মৈপীঠ এলাকায় ত মারামারি ছাড়া কিছুই হয় না। ভোটের সময় তো কথাই নেই। তবে হ্যাঁ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকলে একটা ভরসা থাকে, নিরাপদে ভোট হবে।’’ যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, গ্রামের উন্নয়ন যে বিশেষ কিছু চোখে পড়ে না, আক্ষেপ তরুণীর। বললেন, ‘‘গ্রামের রাস্তা একেবারই বেহাল। প্রাথমিক স্কুল আছে বটে, কিন্তু নজরদারির অভাবে সেখানে পঠনপাঠন ঠিকঠাক হয় না। পরিবহণ সমস্যা আছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কৃশানু: একদম তাই। এলাকার ছোটখাট উন্নয়ন খুবই দরকার।
ইন্দিরা: একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। একটা সই করানোর জন্য জনপ্রতিনিধির দরজায় ঘুরে ঘুরে হয়রান হয়েছি। ভোটের সময়ে কতজন কত কিছু প্রতিশ্রুতি দেন। তারপরে আর চিনতে পারেন কই!’’
কৃষ্ণ মণ্ডল: ‘‘ওঁরা শুধু প্রতিশ্রুতিই দিতে জানেন। আমাদের গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। আর যে ক’জন আছে, তাঁরা সব সময়ে হাসপাতালে থাকেন না। গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা একেবারই ভেঙে পড়েছে। অথচ ভোটের সময়ে নেতারা বলে যান, নতুন ভবন হবে, চিকিৎসক নিয়োগ হবে— আরও কত কী!’’
কলেজের ছেলেমেয়েদের কথা চাকরি-বাকরির চিন্তা ঘুরেফিরে আসে। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘শেষ এসএসসসি হয়েছে ২০১০ সালে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হচ্ছে না বলে শুনি। গরিব বাড়ির মেধাবী ছেলেমেয়েরা যাবে কোথায়! রাজ্য বা কেন্দ্রে যে সরকারই আসুক, আমাদের কর্মস্থানের দিকটা দেখুক।’’
কর্মসংস্থানের কথা উঠতেই ঝাঁজিয়ে উঠলেন রাখি মণ্ডল। বললেন, ‘‘দলের রং দেখে তবেই চাকরি মেলে। আর না হলে মোটা টাকা ঘুষ দিতে হয়। ডিগ্রি বাড়িয়ে কী লাভ!’’
অনন্যা হাজরা: এলাকার সমস্যাগুলোর কথাও ভুললে চলবে না। রাস্তাঘাটের কী অবস্থা হয়েছে। এখনও মাটির ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পানীয় জলের অবস্থা আরও খারাপ। দূরের গ্রাম থেকে জল আনতে হয় গ্রামের মেয়ে-বৌদের। নদী বাঁধ ভেঙে রয়েছে। এ সব দিকে কারও নজর নেই। আমি চাই, যে প্রার্থীই জিতুন, যেন গ্রামীণ এলাকার সমস্যা নিয়ে ভাবেন।’’
সায় দেন পারমিতা কয়াল। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, যুবশ্রী প্রকল্প চালু করেছে। তাতে নাবালিকার বিয়ে অনেক কমেছে। নারীশিক্ষা বাড়ছে। কিন্তু গ্রামের মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? সন্ধের পরে আমরা রাস্তাঘাটে বেরোতে ভয় পাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy