Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

প্রথম রাউন্ডে স্বস্তি, পরীক্ষা তবুও বাকি

হাবড়া, বনগাঁ, জয়নগর, ক্যানিং-সহ নানা এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, কালীপুজোর পরের রাতটা অনেক ক্ষেত্রে আরও বিপজ্জনক।

তোড়জোড়: বাজি ফাটানো হচ্ছে ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা

তোড়জোড়: বাজি ফাটানো হচ্ছে ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ১২:১১
Share: Save:

গোটা দেশে দূষণের মাত্রা যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিবেশবিদরা উদ্বিগ্ন। কালীপুজোয় ব্যাপক হারে বাজি ফাটলে সেই দূষণ এক ধাপে অনেকটা বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা ছিলই। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট বাজির উপরে রাশ টানতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত শব্দমাত্রায় বাজি ফাটানো যাবে বলে জানায় সর্বোচ্চ আদালত।

এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশেই বাজির উপরে রাশ টানতে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের। শহর কলকাতা এবং জেলাগুলিতে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। কালীপুজোর সন্ধেয় প্রথম রাউন্ডে অন্তত পাস নম্বর পাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু এলাকায় বাজি ফাটলেও তুলনায় তা অন্যান্য বছরের তুলনায় কম ছিল বলে মনে করছেন মানুষজন। শহর কলকাতাতেও একই চিত্র। গত কয়েক দিনে ধরপাকড়ও কম হয়নি জেলায় জেলায়। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা এলাকা থেকে প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্তও করেছিল পুলিশ।

তবে পরীক্ষা আরও কয়েক রাউন্ড বাকি। কালীপুজোর রাত গড়ালে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়, তার দিকে নজর থাকছেই। হাবড়া, বনগাঁ, জয়নগর, ক্যানিং-সহ নানা এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, কালীপুজোর পরের রাতটা অনেক ক্ষেত্রে আরও বিপজ্জনক। সে রাতে বাজি ফাটার পরিমাণ আরও বেশি থাকে। ফলে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়াল, তা বুঝতে আরও গোটা একটা রাত পড়ে থাকল।

শুধু দূষণ নয়, শব্দের দাপটে কালীপুজোর রাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় অনেকের। শব্দবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বহু মানুষ গত কয়েক বছরে প্রাণ হারিয়েছেন। চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা, শব্দের দাপটে হৃদরোগে আক্রান্ত হন অনেকে। শ্রবণশক্তি হারান। শ্বাসকষ্ট-সহ আরও কিছু রোগও বয়ে আনে বাজি। বাড়ির পোষা প্রাণিদের অবস্থা তো খুবই করুণ হয়। শব্দের দাপটে বাড়ির কুকুর-বিড়ালেরা ঠাঁই খোঁজে খাটের তলায়, টেবিলের আড়ালে।

হাবড়া শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় বাজি ফেটেছে বেশি। লক্ষ্মীপুজোর রাতে যেমন বাড়াবাড়ি ছিল, তা অবশ্য চোখে পড়েনি। স্থানীয় বাসিন্দা সঙ্গীত শিল্পী মালা বসু কর বলেন, ‘‘সন্ধ্যা পর্যন্ত শব্দবাজি তেমন একটা ফাটেনি। আমাদের চলাফেরা করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। বাকি সময়টা ভালয় ভালয় কাটলে হয়।’’ পুলিশি টহলও এ দিন ছিল চোখে পড়ার মতো।

ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিংয়ে শব্দবাজির দাপট তুলনায় কম। তবে বাজি ফেটেছে ব্যারাকপুরের মণিরামপুর, আর্দালি বাজারে। ইছাপুর, ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া, নৈহাটি এবং কাঁচরাপাড়াতেও সন্ধ্যা থেকে শব্দবাজি ফাটানো শুরু হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শব্দবাজির দাপট। তবু অন্য বারের তুলনায় শব্দবাজি নিয়ে মাতামাতি কিছুটা হলেও কম, মনে করছেন বাসিন্দারা।

ব্যারাকপুরের এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘এত বড় আমাদের দেশ। এত জনসংখ্যা। সবটা আইন করে বন্ধ করা সম্ভব নয়। মানুষের সচেতনতার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy