এ ভাবেই গুমটিতে ঢুকে পড়েছে গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা সংলগ্ন গুমটির সামনে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় এক প্রৌঢ়া। আচমকাই ‘এল’ বোর্ড ঝোলানো একটি গাড়ি হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে সেই গুমটিতে। হতভম্ব হয়ে যাওয়া আশপাশের লোকজন দেখতে পেলেন, চা খেতে আসা ওই প্রৌঢ়াকে ধাক্কা মেরে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই গুমটিতে ঢুকে গিয়েছে গাড়িটি। যার জেরে মৃত্যু হল ওই প্রৌঢ়ার। আর ফুটন্ত চা গায়ের উপরে পড়ে জখম হয়েছেন দোকানদার।
সোমবার সকালে জগদ্দলের সার্কাস মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম কান্তি দেবী (৫২)। তিনি মেঘনা কুলি লাইনের বাসিন্দা ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মোটর ট্রেনিং স্কুলের একটি গাড়ির শিক্ষানবিশ চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় এই ঘটনা ঘটে। ওই গাড়ি যিনি চালাচ্ছিলেন, সেই মহিলা-সহ প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে জগদ্দল থানার বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার একটি মোটর ট্রেনিং স্কুলের মাধ্যমে গাড়ি চালানো শিখছিলেন সহেলি ভট্টাচার্য নামের এক মহিলা। তাঁকে গাড়ি চালানো শেখাচ্ছিলেন গৌরাঙ্গ দাস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, জগদ্দল ফেরিঘাটের রাস্তায় প্রথমে ‘এল’ লেখা গাড়িটি চালানো হচ্ছিল। তার পরে সার্কাস মোড়ের কাছে এসে ঘোষপাড়া রোডে ওঠে গাড়িটি। সেই রাস্তা ধরে কিছু দূর যেতে না যেতেই ঘটে এই বিপত্তি। ওই রাস্তার ধারে দীর্ঘ দিন ধরে চায়ের গুমটি চালান সুনীল সাউ। এ দিন ঘটনার সময়ে স্টোভে চা বসিয়েছিলেন তিনি। আর চা খেতে সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন কান্তিদেবী। প্রত্যক্ষদর্শী অশোক প্রসাদ বলেন, ‘‘আচমকাই গাড়িটি রাস্তার একেবারে ধারে এসে যায়। কেউ কিছু বোঝার আগেই ওই মহিলাকে ধাক্কা মেরে তাঁকে নিয়ে গুমটির ভিতরে ঢুকে গেল।’’
স্থানীয়েরা জানান, গাড়ির ধাক্কায় গুমটির ভিতরে আটকে যান ওই প্রৌঢ়া। প্রাণে বেঁচে গেলেও সুনীলের গায়ে ফুটন্ত চা পড়ে যায়। কোনও মতে ওই প্রৌঢ়া ও সুনীলকে বার করে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে চিকিৎসকেরা কান্তিদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সুনীলকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, ঘটনার পরে চালকের আসনে থাকা সহেলি ও প্রশিক্ষক গৌরাঙ্গকে আটকে রাখেন স্থানীয়েরা। পুলিশ এলে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে।
এ দিন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছে যান কান্তিদেবীর দুই ছেলে। তাঁদের কথায়, ‘‘রাস্তায় চা খেতে যেতে বার বার বারণ করতাম আমরা। তা-ও গিয়েছিলেন। সব শেষ হয়ে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy