Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Bangodhani Yatra

দক্ষিণে বঙ্গধ্বনি যাত্রা ঘিরে তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে 

কুলতলিতে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের।

তৃণমূলের মিছিল। শনিবার কুলতলিতে। ছবি: সমীরণ দাস।

তৃণমূলের মিছিল। শনিবার কুলতলিতে। ছবি: সমীরণ দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং ও কুলতলি  শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

বঙ্গধ্বনি যাত্রা ঘিরে ফের প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে সম্প্রতি এলাকায় এলাকায় তৃণমূলের তরফে বঙ্গধ্বনি যাত্রা নামে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সরকারের কাজের প্রচারে এলাকায় এলাকায় মিছিল করছেন নেতারা। শুক্রবার ক্যানিংয়ে এই বঙ্গধ্বনি যাত্রা হয় ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল, ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির নেতৃত্বে। শনিবার এলাকায় আরও একটি পাল্টা মিছিল হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা ক্যানিং ১ ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরেশরাম দাসের নেতৃত্বে। কুলতলিতে যুব তৃণমূল সভাপতি গণেশ মণ্ডলের নেতৃত্বে মিছিল বেরোয় শুক্রবার। শনিবার মিছিল করতে দেখা যায় ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোপাল মাঝিকে।

ক্যানিংয়ে পরেশ অনুগামীদের দাবি, শুক্রবার বিধায়কের ডাকে যে মিছিল অনুষ্ঠিত হয় তাঁর তুলনায় শনিবারের মিছিলে অনেক বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমান বিধায়ক বহিরাগত। তাই তাঁর ডাকে ক্যানিংয়ের মানুষ রাস্তায় নামে না। এবারের বিধানসভা ভোটে তাঁরা পরেশের পাশে আছেন। তাই পরেশের ডাকেই রাস্তায় নামেন। পরেশ বলেন, “বহিরাগত বিধায়ককে ক্যানিংয়ের মানুষ মানে না। তাই তাঁর মিছিলে লোক হয়নি। আজকের মিছিলে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শ্যামল মণ্ডল পুনরায় টিকিট পেলে মানুষ তাঁর সঙ্গে থাকবেন কিনা আমার জানা নেই। তবে একজন তৃণমূল কর্মী হিসেবে আমি তাঁর সঙ্গে থাকব।”

শ্যামল অনুগামীদের দাবি, ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার টিকিটের জন্য পরেশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেই কারণেই এলাকায় নিজের লোকজন নিয়ে বিধায়কের পাল্টা মিছিল করে শক্তি বোঝাতে চাইছেন। শ্যামল মণ্ডল বলেন, “যারা আমাকে বহিরাগত বলছেন তাঁরাই আসলে অন্য রাজ্যের বাসিন্দা। আমার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই আমার বিধানসভা এলাকা। আমি গতকাল দলের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেছি। আজ যারা কর্মসূচি করছেন তাঁরা নিজেদের কর্মসূচি করছেন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে দলের সঙ্গে এরা অন্তর্ঘাত করেছেন।” এ নিয়ে অবশ্য তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

কুলতলিতে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। ঝামেলা মিটিয়ে লোকসভা ভোটের সময় দুই শিবিরকে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা গেলেও, ভোটের পর ফের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নানা ভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। বঙ্গ ধ্বনি যাত্রা ঘিরেও আরও একবার দেখা গেল সেই ছবি। যুব তৃণমূল সভাপতি গণেশ মণ্ডল বলেন, “দলের তরফে আমায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বঙ্গধ্বনি যাত্রার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছতে। সেই নির্দেশ পালন করছি।” কুলতলি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি গোপাল মাঝির কথায়, “যেখানে দলের বিধায়ক নেই, সেখানে ব্লক সভাপতিরাই এই দায়িত্ব পালন করছেন। মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় সেরকমই নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা নেতৃত্বও ব্লক সভাপতি হিসেবে আমাকে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করতে বলেছে। সেই মতো আমি মিছিল করেছি। আগামী কয়েকদিন বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে কর্মসূচি চলবে।” কুলতলির সিপিএম বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার বলেন, “নানা প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে মিছিলে নিয়ে আসা হচ্ছে। দুই গোষ্ঠী লোক টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এসব করে মানুষের কাছে পৌঁছনো যাবে না। আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তাতেই মানুষ এইসব নেতাদের স্বরূপ বুঝে নিয়েছে। সময় হলেই জবাব দেবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bangodhani Yatra TMC Inner conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy