প্রতি বছর এইভাবে ভাঙন ধরে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতটে। নিজস্ব চিত্র।
দুর্যোগে গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি মন্দিরের সামনের সমুদ্রতট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বার বার। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ভাঙন রোধের যাবতীয় উদ্যোগ জলে গিয়েছে। ক্রমশ এগিয়ে এসেছে সমুদ্র। সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। তা আটকানোর স্থায়ী সমাধানেরও আশ্বাস দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কুম্ভমেলায় কেন্দ্রীয় সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে। কিন্তু গঙ্গাসাগরের জন্য কিছুই দেয় না। তবে, আগামী দিনে গঙ্গাসাগর মেলা জাতীয় মেলা হবেই। মন্দিরের প্রধান পুরোহিতকে অনুরোধ করেছি, এই মেলাকে কেন্দ্র করে এক কোটির বেশি তীর্থযাত্রী আসেন। সেখান থেকে যা আয় হয়, তার সবটা অযোধ্যায় না পাঠিয়ে ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে ভাঙন রোধে মন্দিরের সামনে কংক্রিটের বাঁধ করে দিলে মন্দির ডুবে যাবে না। উনি রাজি হয়েছেন। এতে পুণ্যার্থীদের সুবিধে হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মাইকে জানানো হয়, এ বারের টাকা দিয়েই কাজ শুরু হবে। মন্দিরের মোহন্ত সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘সমুদ্রতটের ভাঙন রোধে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণে খরচ বহন করবে মন্দির কর্তৃপক্ষ।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আগে তো গঙ্গাসাগরে কিছু ছিল না। তিন বার মন্দির ডুবেছে। সমুদ্র এগিয়ে আসছে। তবু আমরা চেষ্টা করছি। মুড়িগঙ্গায় সেতু নির্মাণের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা দিয়েছি। ২-৩ বছর পর থেকে মানুষকে আর কষ্ট করে জল পেরিয়ে আসতে হবে না।’’
সমুদ্রতট বরাবর ১ নম্বর রাস্তা থেকে ৫ নম্বর রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় সারিবদ্ধ ভাবে নারকেল গাছ পুঁতেছিল প্রশাসন। সম্প্রতি ভাঙনের জেরে গাছগুলি সমুদ্রগর্ভে চলে যায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে গঙ্গাসাগরের ভাঙন ঠেকাতে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ ও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর যৌথ ভাবে কাজ শুরু করে। ক্ষয় আটকানোর পরিকল্পনা করেন বিশেষজ্ঞরা। চেন্নাই আইআইটি-র বাস্তুকারেরাও পরামর্শ দেন। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষও সংশ্লিষ্ট ভাঙনপ্রবণ এলাকার সমীক্ষায় সহযোগিতা করে। জলের তলার মাটি কী ভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, সেই রিপোর্ট তৈরি হয়। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ঠিক হয়, এর মধ্যে ৬৭ কোটি টাকা দেবে রাজ্য, বাকিটা দেবে কেন্দ্র। প্রকল্পের কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল কেএমডিএ-কে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরুই হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা অজয় মণ্ডল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মন্দির কমিটি ভাঙন রোধে উদ্যোগী হলে খুব ভাল হবে।’’ এলাকার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে মন্দিরের সামনে ভাঙন আটকানো চেষ্টা সফল হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে মন্দির কমিটি যখন রাজি, আশা করছি তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy