দেখেও দেখছে না পুলিশ। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।
প্রশাসনের তরফেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য বেআইনি ছোট গাড়ি জাতীয় সড়কের উপরে চলবে না। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার থেকে কাকদ্বীপ হয়ে নামখানা পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটার রাস্তায় অসংখ্য ছোট গাড়ির দাপট। পুলিশের জারি করা সেই নির্দেশ কেউই মানছে না। প্রচুর বাইরের গাড়ি ঢুকছে বলেও দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, ‘‘মেলার সময়ে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে ছোট গাড়ি। জাতীয় সড়কের উপরে দেখলেই সেগুলিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তা-ও যদি কিছু সমস্যা থেকে থাকে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ কিন্তু এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পুলিশের চোখের সামনে দিয়েই চলছে এই সব ছোট গাড়ি। তা-ও আবার মেলার জন্য তৈরি হওয়া ‘মুভমেন্ট জোন’-এর মধ্যেই।
জেলা পুলিশের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, মেলার সময়ে ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় সড়কের উপরে কোনও বেআইনি গাড়ি থাকবে না। কাকদ্বীপ মহকুমা পুলিশ প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচারও চালানো হয়েছিল। কিন্তু তা-ও এই ক’দিন সুষ্ঠু মেলার আয়োজনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই সমস্ত বেআইনি গাড়ি।
বেপরোয়া ওই গাড়ির দাপটে বিরক্ত বাস চালকেরাও। কারণ, যাত্রী তুলতে গিয়ে বাসের সঙ্গেও পাল্লা দিচ্ছে বেআইনি ছোট গাড়ি। চালানোর উপরেও নিয়ন্ত্রণ নেই এই গাড়ির, অভিযোগ এমনই।
কুলপি হয়ে কাকদ্বীপ থেকে ডায়মন্ড হারবারের মধ্যে ছোট গাড়ি চলে প্রায় ২২০০। মহকুমা সদর থেকে জুমাই নস্করহাট পর্যন্ত ম্যাজিক গাড়ি চলে কিছু। কাকদ্বীপের মধ্যে ঘোরাফেরা করলেও কাটা তেলে চলা অটো জাতীয় সড়কের উপর উঠে পড়ছে যখন তখন। তার বাইরেও নামখানা, পাথরপ্রতিমা লট ৮ ঘাট পর্যন্ত চলছে। হিসেব বহির্ভূত কয়েকশো মেশিনভ্যান ও ছোট গাড়িও চলছে এখানে। এগুলির কোনও কাগজপত্র নেই। বেশিরভাগ চালকের লাইসেন্সও নেই।
বাস মালিকদের জেলা সংগঠনের নেতা অশোক গায়েন বিষয়টি নিয়ে বার বার বলে বিরক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এই সময় বাইরের রাজ্যগুলি থেকে প্রচুর ভারি গাড়ি আসে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে এই সমস্ত গাড়িগুলি। একটা আন্তর্জাতিক মেলার সময়েও পুলিশের নির্দেশ কেউ মানছে না এটা হাস্যকর।’’ বাস মালিকদের দাবি, মোটর ভেহিকল আইন অনুসারে এমনিতেই জাতীয় সড়কের উপরে বেআইনি গাড়ি চলার কথা নয়। মূলত শাসকদলের রাজনৈতিক আশ্রয় রয়েছে বলেই এই সমস্ত বেআইনি গাড়িগুলি জাতীয় সড়কের উপরে রমরম করে চলছে— এ রকমই দাবি করছেন পরিবহণ দফতরের কেউ কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy