অর্পিতা মণ্ডল ও সুজিত মণ্ডল
যৌতুকের টাকা না পেয়ে গলা টিপে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। মুখে কীটনাশকও ঢেলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়ার পোলতা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম অর্পিতা মণ্ডল (২২)। তাঁর বাবা নিবারণ মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অর্পিতার স্বামী সুজিতকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত আরও চারজনের খোঁজ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। আপাতত আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে গাইঘাটার সুবিদপুরের অর্পিতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাটের পোলতা গ্রামের সুজিত মণ্ডলের। বিয়ের পর থেকেই নানা অছিলায় আরও টাকার দাবিতে অত্যাচারিত হচ্ছিলেন অর্পিতা। এরই মধ্যে তাঁদের একটি মেয়ে হয়। অর্পিতার পরিবারের অভিযোগ, টাকার দাবিতে মেয়েকে মারধর করা হত। পেট্রল-কেরোসিন ঢেলে অর্পিতাকে আগেও মারার চেষ্টা করেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পরে স্থানীয় ভাবে আলোচনার পরে সুজিতরা ‘অপরাধ’ কবুল করে। সব মিটিয়ে নেওয়া হবে বলে।
কিন্তু কিছু দিন পর থেকে ফের শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ, সম্প্রতি স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল সুজিত। বৃহস্পতিবার পড়শিদের কাছ থেকে অর্পিতার বাবা জানতে পারেন, মেয়ে বিষ খেয়েছে। নিবারণবাবুর দাবি, ‘‘গিয়ে দেখি বারান্দায় মেয়ে পড়ে আছে। শ্বশুরবাড়ির বাকিরা পালিয়েছে। অর্পিতাকে রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়।
এ দিন হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে নিবারণ বলেন, ‘‘মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে সুজিত প্রায়ই মেয়েকে মারধর করত। গত কয়েক দিন আগে ১৫ হাজার টাকা চেয়ে পাঠায়। দিতে না পারায় মেয়ের উপরে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ায়। আগে কয়েকবার টাকা না দিতে পারায় মেয়ের গায়ে কখনও পেট্রল, কখনও কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে খুনের চেষ্টা করেছিল। এ বার মারধর করে মেরে ফেলার পরে মুখে বিষও ঢেলে দেয়। আমরা সুজিত-সহ ওর পরিবারের অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’’
সুজিত বলে, ‘‘জেদি স্বভাবের মেয়ে অর্পিতা সামান্য কারণেই উত্তেজিত হয়ে পড়ত। সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এখন মিথ্যা অভিযোগে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy