রেহেনা পরভিন।
পণের দাবিতে ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে, দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছি-ইসলামপুর এলাকায়। মৃতার পরিবারের তরফে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। ধৃতদের নাম রিয়াজুল ইসলাম এবং ফুলজান বিবি। তাদের বিরুদ্ধে খুন, বধূ নির্যাতন ও পণের দাবিতে অত্যাচারের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আজ, শুক্রবার বধূর দেহের ময়না-তদন্ত হবে।
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনা জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতার নাম রেহেনা পরভিন (২৯)। তাঁর মা-বাবা থাকেন দত্তপুকুরের ছোটজাগুলিয়া পঞ্চায়েতের তেঁতুলদিয়া গ্রামে। দু’বছর আগে কদম্বগাছির বাসিন্দা, পেশায় টোটোচালক রিয়াজুলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রেহেনার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে ওই তরুণীর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হত।
পুলিশ সূত্রের খবর, রেহেনার পরিবারের তরফে অভিযোগে বলা হয়েছে, বুধবার রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন আসে। সেখানে গিয়ে পরিজনেরা দেখেন, বিছানার উপরে পড়ে রয়েছেন রেহেনা। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতার ভাই ইকবাল হোসেন জানান, বিয়ের সময়ে তাঁরা এক লক্ষ টাকা পণ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে রেহেনার উপরে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ। ইকবাল বলেন, ‘‘সম্প্রতি জামাইকে গাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য বোনের উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। আমরা চেষ্টা করছিলাম গাড়ি কিনে দিতে। টাকাও জোগাড় করতে শুরু করেছিলাম। তার মধ্যেই এই ঘটনা।’’ তিনি আরও জানান, বুধবার গভীর রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয়, রেহেনা অসুস্থ। সেই শুনে তাঁর বাবা এবং ভাই ওই বাড়িতে যান। তাঁরা বিছানার উপরে রেহেনাকে পড়ে থাকতে দেখেন। গলায় কালশিটে ছিল, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল।
এ দিন কাঁদতে কাঁদতে রেহেনার মা সুফুরা বিবি বলেন, ‘‘মেয়েকে বলেছিলাম বাড়ি চলে আসতে। ও সংসার করতে চেয়েছিল। আমরা ওর মৃত্যুর বিচার চাই। কোনও মেয়ের যেন এমন না হয়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা িগয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরেই রেহেনার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার পরিজনেরা। এর পরেই মৃতার স্বামী এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন সকালে ঘটনার খবর পেয়ে দত্তপুকুর থানার পুলিশ রেহেনার শ্বশুরবাড়িতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরা দাবি করেন, তাঁদের হাতে অভিযুক্তদের তুলে দিতে হবে। সেই বিক্ষোভের মধ্যে থেকেই রিয়াজুল এবং ফুলজান বিবিকে কোনও রকমে বাঁচিয়ে গাড়িতে তোলে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy