Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Electric wire

bangaon: হুকিংয়ের তার টেনে ঘিরে রাখা হচ্ছে মুরগির খামারও

মুরগির খামার মালিকদের অনেকেই চুরি রুখতে খামার বেড়া দিয়ে ঘিরে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাখছেন।

বেআইনি: বোয়ালদহ থেকে ট্যাংরা কলোনির রাস্তায় চোখে পড়ল হুকিং।

বেআইনি: বোয়ালদহ থেকে ট্যাংরা কলোনির রাস্তায় চোখে পড়ল হুকিং। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র  
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৯
Share: Save:

রাস্তার পাশে বিদ্যুতের তারে নজর পড়লেই দেখা যাবে, মূল তার থেকে শাখা-প্রশাখার মতো আরও কিছু তার চলে গিয়েছে বাড়ি, দোকানে। কোথাও আবার হাইটেনশন লাইন থেকে তার টেনে চালানো হচ্ছে পাম্প।

এমনই ছবি দেখা গেল বনগাঁর পাইকপাড়া থেকে বোয়ালদহ এবং বোয়ালদহ থেকে আরশিংড়ি যাওয়ার পথে।

তবে এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। গোটা বনগাঁ মহকুমা জুড়েই হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি চলছে বলে অভিযোগ।

বিপদের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এই প্রবণতায় লাগাম পরানো যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাড়ি বা দোকানে বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও বিদ্যুৎ চুরি করা হচ্ছে। মুরগির খামার মালিকদের অনেকেই চুরি রুখতে খামার বেড়া দিয়ে ঘিরে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে রাখছেন। ওই বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে হুকিংয়ের মাধ্যমে। খোলা তার অত্যন্ত বিপজ্জনক। কয়েক বছর আগে অশোকনগ‌রের সেনডাঙা আনন্দপাড়া এলাকায় এমনই একটি খামারের তারে জড়িয়ে মৃত্যু হয় দুই কিশোর-কিশোরীর। গাইঘাটার ভাড়াডাঙা এলাকাতেও একই ভাবে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল।

তারপরেও হুঁশ ফেরেনি।

গাইঘাটা, গোপালনগর, বাগদার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, মূল বিদ্যুতের লাইন থেকে অনেক বাড়িতেই তার টানা হয়েছে। ওই তারের নীচ দিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করছেন। ঝড়বৃষ্টিতে তার ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘বিদ্যুতের বিল দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই এ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছি।’’

কয়েক বছর আগেও বেলাগাম হুকিংয়ে অন্যতম জায়গা ছিল বনগাঁর ট্যাংরা কলোনি এলাকা। এখন অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটা বদলেছে সেখানে। তবে মহকুমার নানা প্রান্তে চলছে হুকিং। অনেক এলাকা বিদ্যুতের তার এবি কেব্‌লে মোড়া। এ ধরনের তার থেকে হুকিং করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। তবে যে সব এলাকায় খোলা তার আছে, সেখানে কমবেশি হুকিং চলছেই। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ চুরির জন্য লাগানো হয়েছে স্যুইচ। বিদ্যুতের খুঁটিতেই রয়েছে সেই স্যুইচ। সেটি অন-অফ করে চলে বিদ্যুৎ চুরি। স্যুইচ লুকিয়ে রাখা হয় প্লাস্টিকের বোতলের আড়ালে।

ট্যাংরা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, অতীতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হলে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হত। তবে এখন সহজেই মেলে। ফলে হুকিংয়ের প্রবণতা কমেছে। যদিও তাঁদের অভিযোগ, অনেক সময়েই লাগামছাড়া বিদ্যুতের বিল পাঠানো হয়। সমস্যায় পড়েন গ্রাহকেরা। এ জন্য অনেকে বেআইনি ভাবে বিদ্যুৎ টানার কথা ভাবেন।

বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, হুকিংয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধরপাকড় চলে। আর্থিক জরিমানা, আইনি পদক্ষেপ করা হয়। গত এক বছরে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি বনগাঁ ডিভিশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হুকিংয়ের বিরুদ্ধে ২০৫টি এফআইআর করেছে। এই সময়ে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে ১ কোটি ৯০ হাজার টাকা।

লাগামছাড়া বিদ্যুতের বিলের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘বিল গ্রাহকের বেশি মনে হলে তিনি উপযুক্ত নথিপত্র দিয়ে এক মাসের মধ্যে বিল কমানোর আবেদন করতে পারেন। আমরা একটি হিয়ারিং কমিটি করি। সেখানে আলোচনা করে বিল ঠিক করা হয়।’’ অনেক ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মেনে বিলের অঙ্ক কমানো হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Electric wire Power Theft Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy