যান শাসনে ব্যস্ত ইয়ারআলি। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক মাস ধরে ক্যানিং বাস স্ট্যান্ডের পরিচিত যানজটটা দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয়রা বলছেন, এর পিছনে রয়েছেন ইয়ারআলি দফাদার। ক্যানিংয়ের মিঠাখালির বাসিন্দা ইয়ারআলি গত প্রায় মাস চারেক ধরে নিজের উদ্যোগে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডের এই যানজট সামাল দিচ্ছেন। অসুস্থ, বয়স্ক মানুষকে হাত ধরে রাস্তা পার করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর এই কাজে খুশি আমজনতা। ইয়ারআলির কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক নেতারা।
এক সময় ট্রেনে হকারি করতেন ইয়ারআলি। ক্যানিং লোকালে ঘুরে ঘুরে খাবার-দাবার বিক্রি করতেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই কাজ শিকেয় ওঠে। বন্ধ হয়ে যায় রোজগার। কাজের সন্ধানে নানা জায়গায় ঘোরাঘুরি শুরু করেন তিনি। এরকমই একদিন ক্যানিং বাস স্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে ইয়ারআলির চোখে পড়ে চারিদিকে গাড়ি, অটো, টোটোতে কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থা। সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটেও এগোতে পারছেন না। দেখে শুনে নিজেই নেমে পড়েন যানজট নিয়ন্ত্রণে। সেই থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিয়ম করে মুখে বাঁশি নিয়ে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে যানজট সামলে যাচ্ছেন এই প্রৌঢ়। এখন প্রতিদিন সকালে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক সামলানোর জন্য দু’চারজন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। কিন্তু স্থানীয়রা জানান, মূল কাজটা করছেন ইয়ারআলিই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসি মুখে কাজ করছেন তিনি। ট্রাফিক সামলাতে বেশ কিছু কেরামতিও আয়ত্ত করেছেন। ইয়ারআলি বলেন, “দীর্ঘদিন ট্রেন বন্ধ ছিল বলে রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনও কাজই ছিল না। একদিন এই বাসস্ট্যান্ডের পাশে দেখি প্রচুর যানজট। তখনই সেই যানজট সরানোর কাজ শুরু করি। সেই থেকে এই কাজই করে যাচ্ছি। পুলিশ-প্রশাসনও আমাকে উৎসাহিত করেছে। এখন এ কাজ ছেড়ে অন্য কিছু করতে ভাল লাগে না।”
কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সংসার চলবে কী ভাবে? ইয়ার আলি বলেন, “থানার আই সি, এলাকার যুব তৃণমূল নেতা, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ অনেকেই সাহায্য করছেন। তাতে কোনওরকমে চলে যাচ্ছে।” এলাকার যুব তৃণমূল নেতা পরেশরাম দাস বলেন, “উনি যেভাবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করছেন তার তুলনা হয় না। আমি ও আমার সহকর্মীরা ওঁর পাশে আছি। ওঁর যাতে একটা নির্দিষ্ট রোজগারের ব্যবস্থা করা যায়, সেটা দেখা হচ্ছে।” ক্যানিং থানার আই সি আতিবুর রহমান বলেন, “উনি খুব ভাল কাজ করছেন। প্রশাসনের তরফে আমরা ওঁর পাশে আছি।” ক্যানিংয়ের বাসিন্দা রবিন মণ্ডল, সুবল ঘোষরা জানান, ওঁর জন্যই ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড এখন যানজট মুক্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy