ধাতব বেল্টের উপর সাজানো সারি সারি ব্যাগ, ট্রলি। প্রায় একই রকম দেখতে সবগুলি। এতগুলির মাঝে কোনটি আপনার তা এক ঝলক দেখে খুঁজে বার করা মুশকিল। একই কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে প্রতি বারই সামনে আসছে। কিন্তু নিজের নাম লেখা ব্যাগটি কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেন না। পাশের জনের সমস্যা আবার অন্য। তিনি মালপত্র সবই পেয়েছেন, কিন্তু সেগুলি অক্ষত নয়। কোনওটির কোনা ভেঙে গিয়েছে, তো কোনওটির পা। এমন অবস্থায় কী করণীয়? ঘুরতে যাওয়ার আগে জিনিসপত্রের বিমা করানো থাকলে ততটা চিন্তা থাকে না। তবে বাড়তি টাকা দিয়ে বিমা করাতে অনীহা প্রকাশ করেন অনেকেই। যদি বিমা না থাকে, সে ক্ষেত্রে বিমান সংস্থাকেই তার দায়ভার নিতে হয়। বিমান সংস্থার থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করারও কিছু নিয়ম আছে। জেনে নিন সেগুলি কী কী।
আরও পড়ুন:
১) প্রথমে বিমানবন্দরের মধ্যে নির্দিষ্ট সংস্থার ‘হেল্প ডেস্ক’-এ যান। আপনার সমস্যার কথা তাঁদের পরিষ্কার করে বলুন। প্রয়োজনে জিনিসপত্রের বিবরণ, ছবিও দেখাতে পারেন। বিমানে ওঠার আগে ব্যাগপত্রের ওজন মাপা হয়। কোন ব্যাগের কত ওজন সেই সমস্ত বিবরণ-সহ ‘ইউনিক কোড’ সমেত মালপত্রের গায়ে একটি কাগজের ‘ট্যাগ’ লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই ট্যাগের হুবহু আরও একটি লাগানো থাকে বোর্ডিং পাসের গায়ে, যাতে জিনিসপত্র হারিয়ে গেলে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। ওই ‘ট্যাগ’টি যত্ন করে রাখলে ঝক্কি অনেকটা এড়ানো যাবে।
২) এ বার ‘প্রপার্টি ইরেগুলারিটি রিপোর্ট’ বা ‘পিআইআর’ করার পালা। প্রপার্টি ইরেগুলারিটি রিপোর্ট করলে বিশেষ ধরনের একটি ইউনিক কোড পাওয়া যাবে। ওই সূত্র ধরেই মালপত্রের খোঁজ করে বিমানসংস্থা।
৩) বিমান সংস্থার নির্দিষ্ট মেলআইডি-তে ওই ‘পিআইআর’ কোড-সহ কবে, কোথা থেকে ব্যাগ হারিয়েছে বা ট্রলির কী রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে তৎক্ষণাৎ মেল করতে হয়।
৪) মেল করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি হারানো জিনিস খুঁজে না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে বহু বিমান সংস্থাই ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকে। তবে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বিমান সংস্থা এবং গন্তব্যের উপরেও নির্ভর করে।
আরও পড়ুন:
ঝক্কি এড়াতে কী কী মাথায় রাখবেন?
১) বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে গোছানো ব্যাগ, স্যুটকেস এবং ট্রলির ছবি তুলে রাখুন। তেমন কোনও বিপদ হলে ওই ছবি দেখিয়ে মালপত্রের সমস্ত বিবরণ পাওয়া সম্ভব।
২) একটু খরচ করে যদি ব্যাগের সঙ্গে ‘ট্যাগ’ ঝুলিয়ে দিতে পারেন, তা হলে হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পাওয়া অনেকটা সহজ হয়। এই ট্যাগটি অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইলের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফলে ব্যাগ বেহাত হলেই ফোনে সতর্কবার্তা এসে পৌঁছবে।
৩) স্যুটকেস, ট্রলির বাইরের অংশে অনেকেই নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখে রাখেন। প্রয়োজনে ব্যাগের ভিতরেও সমস্ত তথ্য দিয়ে রাখুন। কোনও কারণে বাইরের অংশে লাগিয়ে রাখা নাম, ঠিকানার স্টিকার যদি উঠে যায়, তা হলে ভিতরেরটি কাজে লাগবে।