Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হেল্পলাইনে এক ফোনেই হাজির মাতৃযান

সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ দফতর একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সরকারি ভাবে মাতৃযানের ব্যবস্থা করেছে। শিশুমৃত্যুর হার কমাতে রাজ্য সরকার বার বার প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের উপর জোর দিয়েছে।

ভরসা: আধুনিক মাতৃযান। নিজস্ব চিত্র

ভরসা: আধুনিক মাতৃযান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

হেল্পলাইনে ফোন করলে এ বার থেকে সটান বাড়ি পৌঁছে যাবে ‘মাতৃযান’। মানে, অ্যাম্বুল্যান্স। প্রসূতি মায়েদের হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে সরকারি এই পরিষেবা।

সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ দফতর একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সরকারি ভাবে মাতৃযানের ব্যবস্থা করেছে। শিশুমৃত্যুর হার কমাতে রাজ্য সরকার বার বার প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের উপর জোর দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করতেন।

প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য সরকার অবশ্য মাতৃযানের ব্যবস্থা আগেই করেছিল। তবে তাতে সমস্যা ছিল। এত দিন রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যক্তিগত মালিকানার মাতৃযানই চলছিল। সরকার ওই সব গাড়ির ভাড়া দিত। তবে ফোন করে সময় মতো ব্যক্তি মালিকানার ওই মাতৃযান সব সময়ে পাওয়া যেত না। এ ছাড়া মাতৃযানের চালকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিল। এখন থেকে যে ব্যবস্থা বহাল হতে চলেছে, তাতে প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মহকুমা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন হাসপাতাল ওই মাতৃযান পরিষেবা পাবে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আধুনিক মানের ওই মাতৃযানে অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ সব ধরনের পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে। থাকবেন একজন নার্সও। হেল্পলাইন নম্বর ১০২ ডায়াল করলে আধঘণ্টার মধ্যেই প্রসূতি মায়ের বাড়িতে পৌঁছে যাবে মাতৃযান। গাড়িতে জিপিএস চালু করে চালক গন্তব্য বুঝে নেবেন। ইতিমধ্যে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ২টি, গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং-১, ২ ব্লকের জন্য ১টি করে মাতৃযানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৪২টি মাতৃযানের ব্যবস্থা হয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত দিন ব্যক্তি মালিকানার মাতৃযান নিয়ে অভিযোগ আসত। এ বার আধুনিক মানের মাতৃযান চালু হওয়ায় প্রসূতিরা উপকৃত হবেন। মাতৃযান নিয়ে তাঁদের আর আগের মতো হয়রানিও হতে হবে না। ২৪ ঘণ্টাই এই পরিষেবা মিলবে।’’

ক্যানিংয়ের হেড়োভাঙার আমিনা বিবি বলেন, ‘‘আমার গর্ভবতী মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য আশাকর্মী ফোন করলে ২৫ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স চলে আসে। এ ধরনের পরিষেবা চালু হওয়ায় আমরা খুশি।’’ বাসন্তীর বাসিন্দা সালাউদ্দিন সর্দার বলেন, ‘‘অনেক সময়েই মাতৃযানের চালকেরা ফোন বন্ধ রাখতেন। অনেক সময় তাঁরা আবার যেতেও চাইতেন না।’’ তিনি আরও জানান, এখন যে মাতৃযান চালু হয়েছে, তার হেল্পলাইনে ফোন করলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই গাড়ি পাওয়া যাবে।

তবে বিষয়টি নিয়ে সকলের মনেই একটু দ্বিধা আছে। অধিকাংশই মনে করছেন, প্রথম-প্রথম হয় তো পরিষেবা ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে, পরে কী হবে, সেটাই দেখার। নানা কারণে রাজ্যের নানা প্রান্তে এই পরিষেবা নিয়ে আপত্তি তুলছেন বেসরকারি মাতৃযান চালকেরা। বিভিন্ন স্তরে আলোচনা চলছেও প্রশাসনের সঙ্গে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE