বাঁধের অবস্থা খারাপ। আতঙ্কে গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র
পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল ঘোড়ামারা পঞ্চায়েত এলাকা। পঞ্চায়েতের লোহাচড়া ও হাটকোলা গ্রামের কাছে হুগলি নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জলে ঢুকে ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু পান বরজ, কৃষি জমি ও মাছের পুকুরের।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বহু বছর ধরে একটু একটু করে নদী ও সমূদ্র বাঁধ ভেঙে এগিয়ে আসছে গ্রামের দিকে। অনেকেরই বাড়িঘর, জমি পুকুর তলিয়ে গেছে নদীতে। বসত বদলাতে হয়েছে বহু বার। অনেকে দ্বীপ ছেড়ে নতুন করে সংসার পেতেছেন সাগর বা কাকদ্বীপ এলাকায়। বর্তমানে দ্বীপে জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। ধান, পান চাষ ও মিন ধরাই এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা। এলাকায় তেমন কাজ না থাকায় গ্রামের যুবকরা অনেকেই ভিন্ রাজ্যে কাজের খোঁজে যাচ্ছেন অনেক দিন ধরেই।
এত সমস্যার মধ্যেও অর্থের অভাবে বা জন্ম ভিটের টানে অনেকেই পড়ে রয়েছেন ওই দ্বীপে। বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, আমরা খেতে পাই না পাই, এই দ্বীপেই থাকতে চাই। সরকার শুধু নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢোকাটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করুক।
সেচ দফতর থেকে বাঁধ তৈরির কাজ চলছেও। পাশাপাশি পঞ্চায়েত থেকেও একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষদের দিয়েই বাঁধ সারানোর কাজ হচ্ছে। লোহাচরা ও হাটখোলা গ্রামের কাছে ধস নামা বাঁধে আমপানের আগে থেকেই একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যেমে কাজ চলছিল। কিন্তু দুর্যোগের কয়েক দিন আগে থেকে শ্রমিকেরা নিজেদের ঘর বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে বাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরেই আমপানে তছনছ হয়ে যায় শ’য়ে শ’য়ে বাড়ি ও পানের বরজ। ঝড়ের পড়ে স্থানীয় মানুষ কৃষিজমি, পানের বরজ সামলাতে বাঁধের কাজে যোগ দিতে পারেননি। এর মধ্যেই পূর্ণিমার ভরা কোটালে নতুন করে বেশ কিছুটা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রায় ২০ ফুট করে দু’টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাতে ক্ষতি হয়েছে কৃষি জমি, মাছের পুকুর ও আনাজ চাষের।’’
পঞ্চায়তের প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, ‘‘আমপানের আগে থেকেই পঞ্চায়েত থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যেমে বাঁধ সারানোর কাজ হচ্ছিল। দুর্যোগের আগে শ্রমিক না পাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাতেই বিপত্তি হয়েছে। তবে যে অংশ থেকে জল ঢুকেছিল তা ফের সারানো হচ্ছে।’’
কাকদ্বীপ সাব ডিভিশনের সেচ দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র কল্যাণ দে বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত থেকে আমাদের কাছে আবেদন করেছিল, রিং বাঁধ করে দেওয়ার জন্য। তাই ওই এলাকায় চারটি জায়গা মিলিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার রিং বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের কাজের কোনও জায়গা থেকে জল ঢোকেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় চারটি ব্লকে আমপানে ভেঙে যাওয়া বাঁধ অস্থায়ী ভাবে সারানো হয়েছিল। কোথাও জল ঢোকার খবর পাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy