—প্রতীকী চিত্র।
বনকর্মীদের বিরুদ্ধে মৎস্যজীবীদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। মাছ ধরতে গেলে নৌকো, জাল কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, হাজার হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার উপরে, মাছ ধরার অনুমতিপত্র বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) কেড়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ সবের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে সজনেখালি রেঞ্জ অফিসে স্মারকলিপি দিলেন কয়েকশো মৎস্যজীবী। সুন্দরবন বন উপকূল মাছ-কাঁকড়া মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের দীর্ঘ দিন ধরে নতুন বিএলসি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে পুরনো বিএলসি যাঁদের রয়েছে, সেগুলিই মূলত ভরসা। বিএলসি যাঁদের আছে, এমন অনেকেই ইদানীং আর মাছ-কাঁকড়া ধরতে যান না। ফলে তাঁদের কাছ থেকে সেগুলি ভাড়া নিয়ে অন্য মৎস্যজীবীরা মাছ-কাঁকড়া ধরছেন বলে অভিযোগ। এতে এক দিকে যেমন বিএলসির মূল মালিকেরা বেশ কিছু টাকা উপার্জন করছেন, তেমনই যাঁরা মাছ-কাঁকড়া ধরতে যাচ্ছেন, তাঁরাও উপকৃত হচ্ছেন।
কিন্তু এখানেই আপত্তি বন দফতরের। এই সমস্ত বিএলসি বাজেয়াপ্ত করার কথা ঘোষণা করেছে বন দফতর। পরিবর্তে যাঁরা প্রকৃতই মৎস্যজীবী, তাঁদের নতুন বিএলসি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই মূলত বিক্ষোভ হয়েছে এ দিন।
লাহিড়ীপুরের বাসিন্দা নীলিমা মাঝি বলেন, ‘‘আমার স্বামী মাছ ধরতেন। তাঁর নামেই বিএলসি। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পরে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে এই বিএলসির ভাড়ার টাকাতেই সংসার চালাই। বিএলসি বাতিল করলে কী খাবো? তাই বিক্ষোভে সামিল হয়েছি।” পাখিরালয়ের বাসিন্দা দেবী মিস্ত্রির কথায়, ‘‘আমার স্বামী মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যান। তাঁর নামে থাকা বিএলসি ভাড়া দিয়ে সংসার চলে। দু’টো ছোট ছোট সন্তান। বিএলসি বাতিল করলে কী ভাবে চলবে জানি না!”
মৎস্যজীবী সংগঠনের অন্যতম সদস্য শ্রীধর মণ্ডল বলেন, “বন দফতর লাগাতার মৎস্যজীবীদের উপরে অত্যাচার করছে। দা, টর্চ লাইট, রেডিয়ো নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কোর এলাকায় যেখানে মাছ পাওয়া যায়, সেখানে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিএলসি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে সুন্দরবনের খেটে খাওয়া মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের উপরে অন্ধকার নেমে আসবে।’’
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “যাঁদের নামে বিএলসি, তাঁদের অনেকেই মারা গিয়েছেন। অনেকে মাছ ধরতে যান না। এই পেশার সঙ্গেও আর যুক্ত নন। অথচ, তাঁদের বিএলসি মোটা টাকায় ভাড়া খাটানো হচ্ছে। এগুলিকে বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের নতুন বিএলসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাকি যে অভিযোগ আছে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy