—ফাইল চিত্র
ফড়েরা তো ছিলই। সঙ্গে এ বার জুড়েছে করোনা আর কুয়াশা। এই ত্রিফলায় ফালাফালা হওয়ার জোগাড় আনাজ চাষিদের। চাহিদা নেই। জোগান বেশি। ফলে প্রায় জলের দরে আনাজ বিক্রি করতে হচ্ছে বসিরহাট ও ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকার চাষিদের।
করোনা-কালে কমেছে অন্য কাজের সুযোগ। ফলে চাষি পরিবারগুলি ফসল উৎপাদনে এ বার অনেক বেশি মনোযোগী। চাষি পরিবারের যে ছেলেটি ভিন্ রাজ্যে কাজের জন্য যেত, সে ফিরেছে বাড়ি। অনেকেরই পুরনো কাজের জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এ ক্ষেত্রে বাপ-ঠাকুরদার চাষের পেশা কিছুটা বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয়েছে। ফলে ফলন বেড়েছে অনেকটাই। অন্য বছর এ সময়ে এতটা কুয়াশা হত না। আনাজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। তাই কুয়াশা বাড়তে থাকায় চাষিরা বাধ্য হয়ে অনেক আগেই কেটে ফেলছেন ফসল। বাজারে বাড়ছে জোগান। যে কারণে ফড়েরা মাঠে গিয়ে ফসল সংগ্রহে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। করোনায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমেছে। ফলে অর্থনীতির স্বাভাবিক সূত্র ধরেই কমছে আনাজের দাম।
বসিরহাটের সংগ্রামপুরের রতন মণ্ডল, ফজের গাজির বাড়ি পাশাপাশি। গতবার দু’জন মিলে আড়াই বিঘা জমিতে আনাজ চাষ করেছিলেন। এ বার চাষ করেছেন পাঁচ বিঘা জমিতে। ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। কিন্তু বেশি ফলনের ফল হয়েছে খারাপ। রতন, ফজেরের কথায়, ‘‘বাড়ির বয়স্ক, মহিলারাও এ বার চাষের কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। ফলন বেড়েছে। কিন্তু দাম পাচ্ছি না।’’ দেগঙ্গার মুকুন্দ দাস, আশিক মণ্ডলেরা গুজরাতে সোনা-রুপোর গয়না তৈরি করতেন। লকডাউনে ফিরে এসেছেন। মুকুন্দের কথায়, ‘‘বাপ-ঠাকুরদার পেশাই বেছে নিয়েছিলাম। পেট তো চালাতে হবে। কিন্তু ফসলের যে দাম পাব না, তা আন্দাজ করতে পারিনি।’’
ভাঙড়ের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে ফুলকপি প্রতি পিস কিনছেন ৩-৪ টাকা দামে। বাজারে ক্রেতারা তা কিনছেন প্রতি পিস ১০-১৫ টাকায়। বাঁধা কপি কেনার দর ৬-৮ টাকা। তা বিকোচ্ছে ১৫-২০ টাকায়। ক্যাপসিক্যাম কেনা হচ্ছে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে। বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৫-৫০ টাকায়। ভাঙড়ের পানাপুকুর গ্রামের চাষি আনোয়ার আলি মোল্লা বলেন, ‘‘যে ফুলকপি ১৫ দিন পরে ওঠার কথা, কুয়াশার কারণে তা তুলে ফেলতে হচ্ছে। হাটে মাল নিয়ে গেলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম দিতে চাইছেন না। খেত থেকে মাল তুলে হাটে নিয়ে যাওয়ার খরচ আছে। এ দিকে, আনাজ বিক্রি না হলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ চাষিদের বক্তব্য, অন্যবারের থেকে এ বার কুয়াশার পরিমাণ বেশি। তাই বাড়ছে সমস্যা।
চাষিদের অভিযোগ, করোনার অজুহাতে ফড়েরা মাঠে গিয়ে ফসল কিনছেন না। ফড়েদের উপরে আগের মতো নিয়ন্ত্রণ নেই বাজার কমিটিরও। তাই মিলছে না ভাল দাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy