কঙ্কনদিঘির মঠবাড়িতে খননের কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
গত বছর পিলখানা ঢিবির পরে এ বছর মঠ বাড়িতে খননকার্য শুরু করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। রায়দিঘি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কঙ্কনদিঘির ওই অংশে খনন শুরু হয়েছে ১ মে থেকে। মঠ বাড়ি খননকার্যের ডিরেক্টর দুর্গা বসু বলেন, “অতীতে এই এলাকা থেকে স্থানীয় ভাবে এবং গত বার খননের পরে যে সব প্রত্নবস্তু উদ্ধার হয়েছে, তা দেখে ধারণা খ্রিস্টিয় নবম ও দশম শতকে এই এলাকায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটেছিল। এলাকায় সে সময়ে বৌদ্ধ সংস্কৃতির যে পূর্ণ বিকাশ ঘটেছিল, তার বিস্তৃতি এখানেও রয়েছে কিনা তা জানাই এ বারের খননের উদ্দেশ্য।” তিনি জানান, আপাতত মে মাস জুড়ে এই কাজ চলবে। তবে উল্লেখজনক কিছু উদ্ধার হলে খনন কাজের মেয়াদ বাড়ানো হবে।
গত বছর পিলখানা ঢিবি উৎখননের ফলে মিলেছিল খ্রিস্টিয় নবম-দশম শতকে নির্মিত ইটের তৈরি ধর্মীয় স্থাপত্যের কাঠামোর অংশ। পাওয়া গিয়েছিল বৌদ্ধদের ধনদেবতা ‘জম্ভল’-এর পোড়ামাটির মূর্তি, ‘গণ মূর্তি’ যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগে সংরক্ষিত। এ ছাড়াও আরও কিছু টুকিটাকি জিনিস মিলেছিল।
মথুরাপুর ২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পিলখানা ঢিবির জমির মালিকের আপত্তিতে এ বছর সেখানে পুনরায় খনন কাজ চালানো যায়নি। দুর্গা বসু ও তাঁর সহযোগী গবেষক মুনমুন মণ্ডল জানান, এ বার মঠ বাড়িতে ক’দিনের খনন কাজে পাওয়া গিয়েছে ধূসর ও কালো রঙের মৃৎপাত্রের ভাঙা অংশ, হাড়ের টুকরো, শামুক, নানা আকৃতির ও রঙের ইট ও অস্পষ্ট ইটের কাঠামো। বৃহস্পতিবার খননকাজে উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা মিলেছে স্থাপত্যের ভিত দেওয়ার আগে ব্যবহার করা বালি ও মাটির তিনটি স্তর।
জায়গাটির নাম ‘মঠ বাড়ি’ হওয়ার কারণ কী?
জেলার প্রত্নতত্ত্ব ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক দেবীশংকর মিদ্যা বলেন, “মঠ বলতে সন্ন্যাসী ও ভিক্ষুদের থাকা ও উপাসনার স্থান বোঝায়। অতীতে এই এলাকা থেকে বৌদ্ধতান্ত্রিক মোটিফ, টেরাকোটার বৌদ্ধতান্ত্রিক দেবী (মারীচ মূর্তি) পাওয়া গিয়েছে। তাই গত কয়েক দশক ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা ধ্বংসপ্রাপ্ত মাটি ইটের এই স্তূপকে মঠ বাড়ি হিসাবে চিহ্নিত করে এসেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy