Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ভিভিপ্যাট থাকছে সর্বত্র

আজ ভোট নোয়াপাড়ায়

এই যদি ভোটের সর্বাধুনিক ব্যবস্থা হয়, তা হলে নিরাপত্তার ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে বিরোধীদের কিছু অভিযোগও রয়েছে। এই কেন্দ্রের মোট ২৭৩টি বুথের প্রায় ১০০টিতে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী।

ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনে। নিজস্ব চিত্র

ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নোয়াপাড়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

ইভিএম যেমন ছিল, তেমনই থাকছে। তবে, এ বারের নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ইভিএমের সঙ্গে জুড়েছে ভিভিপ্যাট।

কী এই ভিভিপ্যাট?

ভোটাররা দেখতে পাবেন যে তিনি যেখানে ভোট দিলেন, ঠিক সেখানেই ভোটটি পড়ল কিনা। তবে, বিরোধীদের অভিযোগ, ভিভিপ্যাটের সুবিধা পেতে তো বুথ পর্যন্ত পৌঁছতে হবে! সেটা কী হতে দেবে শাসকদল?

যদিও এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল এবং প্রশাসন।

এই যদি ভোটের সর্বাধুনিক ব্যবস্থা হয়, তা হলে নিরাপত্তার ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে বিরোধীদের কিছু অভিযোগও রয়েছে। এই কেন্দ্রের মোট ২৭৩টি বুথের প্রায় ১০০টিতে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে সেখানে শাসক দলের দাপাদাপি থাকবে বলে আগাম নালিশ ঠুকে রেখেছে বিজেপি।

তবে প্রশাসনের আশ্বাস, কোনও বুথের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢিলেঢালা নয়। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেছেন, ‘‘যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না, সেখানে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ থাকছে। ফলে নিরাপত্তা যথেষ্ট আঁটোসাঁটোই থাকছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্রের জন্য পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলেছে। যে সব চত্বরে তিন-চার বা পাঁচটি বুথ থাকছে, সেখানেই থাকছেন বাহিনীর জওয়ানরা। বাকি বুথগুলিতে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দেবে রাস্তায়। কোনও অভিযোগ উঠলে বা কোথাও গোলমাল হলে পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, প্রতিটি বুথ চত্বরে থাকছেন একজন করে মাইক্রো অবজার্ভার।

এ তো গেল প্রশাসনিক ব্যবস্থা। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও নোয়াপাড়া পুনরুদ্ধারে বেশ আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছে। ছোট ছোট এলাকা ভাগ করে এক এক জন হেভিওয়েট নেতাকে তা নিয়ন্ত্রণের ভার দেওয়া হয়েছে। গতবার এই আসনটি কার্যত কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জু বসু অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন। ফলে এ বার আর তৃণমূল কোনওভাবেই এই ভোটকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে না।

ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ থাকছেন ব্যারাকপুরের ঘুসিপাড়ায়। কাউগাছি এলাকার ভার পড়েছে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের উপর। ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকে দেওয়া হয়েছে আর্দালি বাজার এলাকার দায়িত্ব। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ ঘাঁটি গেড়েছেন নীলগঞ্জ-শিউলি এলাকায়। ব্যারাকপুর ওয়্যারলেস মোড় এলাকায় থাকছেন তৃণমূল নেতা কাজল ঘোষ। আর পুরো ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ভার রয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপর।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তৃণমুলের এ বার দু’রকম প্রেস্টিজের লড়াই। এক যদি হয়, হৃত আসন পুনরুদ্ধার, তা হলে দ্বিতীয় কারণ মুকুল রায়। তিনি ফ্যাক্টর হন বা না হন, তৃণমূল প্রমাণে মরিয়া যে দলত্যাগী মুকুলের কোনও প্রভাবই নেই এই এলাকায়। এমন লড়াইয়ে চাপা পড়ে যাচ্ছে গতবারের পরাজিত প্রার্থী মঞ্জুর প্রচারে না নামা। দলের এক নেতা বলছেন, ‘‘মঞ্জু বৌদি প্রচারে নামলে লাভের থেকে লোকসান বেশি হত। ফলে তাঁকে প্রচারে না নামানো দলেরই স্ট্র্যাটেজি।’’

বিজেপির প্রার্থী সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ অবশ্য ভিন্ন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অবাধ ভোট হলে তৃণমূল স্বস্তিতে থাকবে না বলেই, শনিবার থেকেই বাইরের লোক ঢোকানো হচ্ছে মোহনপুর-সহ লাগোয়া এলাকায়। সিপিএমের গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘মনিরামপুরে আমাদের পোলিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধমকানো হচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েছি। কোনও ফল নেই।’’

এমন অভিযোগকে ‘পরাজয়ের আতঙ্ক’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন অর্জুন সিংহ। ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক বলছেন, এমন অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তেমন অভিযোগ হলে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করানো হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

EVM VVPAT VVPAT machine Noapara by-election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE