Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

তারের জটলা যেন মাকড়সার জাল

বাদুড়িয়া পুরসভা থেকে ১৯৮৬ সালে ৫৭৬ ফুট লম্বা, ৪৫ ফুট চওড়া লোহার কাঠামোয় অ্যাসবেস্টটসের ছাওনি দেওয়া  বাজার তৈরি করা হয়। মাছ, আনাজ, ফল, জামাকাপড় সবই বিক্রি হয় ওই বাজারে। কিন্তু বাজারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই।

আশঙ্কা এই বাজার নিয়েই।—নিজস্ব চিত্র।

আশঙ্কা এই বাজার নিয়েই।—নিজস্ব চিত্র।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৩
Share: Save:

বিদ্যুতের খোলা তার ঝুলছে। সেই তারের জটের মধ্যে বাসা বেঁধেছে মাকড়সার দল। যত্রতত্র দড়ি, পলিথিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পাশে বিপজ্জনক ভাবে লাগানো রয়েছে মিটার ও স্যুইচ বোর্ড। এমনই অবস্থা বাদুড়িয়ার নিত্য বাজারের। ঝুঁকি নিয়েই ব্যবসা করেন শতাধিক ব্যবসায়ী।

বাদুড়িয়া পুরসভা থেকে ১৯৮৬ সালে ৫৭৬ ফুট লম্বা, ৪৫ ফুট চওড়া লোহার কাঠামোয় অ্যাসবেস্টটসের ছাওনি দেওয়া বাজার তৈরি করা হয়। মাছ, আনাজ, ফল, জামাকাপড় সবই বিক্রি হয় ওই বাজারে। কিন্তু বাজারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। শুধু তাই নয়, বাজারে ঢোকার রাস্তাগুলি এতই সরু, যে আগুন লাগলে দমকলের গড়ি ঢুকতেই পারবে না। এখন বাজারের পরিকাঠামোর অবস্থাও খারাপ। অ্যাসবেস্টটসের চালগুলি ভেঙে পড়ছে। রোদ-বৃষ্টি ঠেকাতে মাথার উপরে লাগানো হয়েছে পলিথিন। সেখানেও দড়ি ও তারের জঙ্গল ভর্তি। ছাউনির তলায় থাকা লোহার খুঁটিতে বাঁধা রয়েছে বিদ্যুতের মিটার। ওই বোর্ড থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে আলো জ্বালানো হচ্ছে বাজারে। যা বিপজ্জনক। ওই বাজারে কেনাকাটা করেন কয়েক হাজার মানুষ। অথচ ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। ইন্দ্রজিৎ হালদার, করিম মণ্ডল, অনিমেষ মুখোপাধ্যায়, সহিদুল মোল্লা বলেন, ‘‘খোলা অবস্থায় থাকা বিদ্যুতের তার, দড়ি, পলিথিনের জঙ্গলের মধ্যে আছে পোশাকের দোকান। বাজার সংলগ্ন পাটের গোডাউন। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও নেই। আগুন লাগলে বাজার থেকে বেরোনোরও পথ নেই।’’

ওই বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম, প্রতাপ বাছাড়, রাম বাছাড় বলেন, ‘‘একবার আগুন বড় ধরনের দুর্ঘটনার মধ্যে পড়তে হবে। বাদুড়িয়ায় কোনও দমকলের গাড়ি থাকে না যে, দ্রুত খবর দিলেও আগুন নেভানোর জন্য চলে আসবে। বাজারের মধ্যে নিকাশি ব্যবস্থাও খারাপ।’’ পুরসভার বাস্তুকার সুভাষ চৌধুরী বলেন, ‘‘নিরাপত্তা বাড়াতে বাজারটির আধুনিকরণ জরুরি। তা না হলে যে ভাবে বিদ্যুতের লাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, শর্ট সার্কিটের ফলে বড় রকম বিপদ ঘটতে পারে।’’

ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নুর ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘‘বাজারের নিরাপত্তার কথা পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি।’’ পুরপ্রধান তুষার সিংহ বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরকে বলা হয়েছে, বাজারের মধ্যে পাইপের ভিতর দিয়ে তার টানতে। যত্রতত্র বিদ্যুতের তার টেনে হুকিং করায়, দড়ি, পলিথিন থাকায় বাজারটি জতুগৃহে পরিণত হয়েছে।’’ ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শতাধিক ঘর-সহ গাড়ি পার্কিং, বাথরুম, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র-সহ আধুনিক পরিষেবা যুক্ত নতুন বাজার তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

অন্য বিষয়গুলি:

Market Electric Wire Spider Web
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE