অঙ্গসজ্জা: পরিষেবা বেহাল, রঙের প্রলেপ পড়ছে। ছবি: অরুণ লোধ
সংস্কারের সৌজন্যে বন্ধ ছ’মাস হয়েছিল বজবজ শ্মশানের দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি। সম্প্রতি একটি চুল্লি চালু হয়েছে। দু’টি চুল্লিই বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বজবজ ও সংলগ্ন এলাকার মানুষ। একটি চালু হওয়ায় সমস্যা যে মিটেছে, এমন কথা বলছেন না স্থানীয়েরা। তাঁদের দাবি, তাতে দাহ করতে বহু সময় লাগছে। পুরসভার দাবি, সংস্কার চলছে। কিছু দিনের মধ্যে শেষ হবে।
বজবজ পুর এলাকার এই শ্মশানে ২০০৪ সালে প্রথম বৈদ্যুতিক চুল্লি বসে। তার পরে আরও একটি। গত পাঁচ-ছ’মাস ধরে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লিই সংস্কারের জন্য বন্ধ রাখা রয়েছে। ভরসা কাঠের চুল্লি। কিন্তু এই চুল্লি সে ভাবে সচল না থাকায় কাঠের অভাব যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বায়ুদূষণের আশঙ্কা। তাই বৈদ্যুতিক চুল্লি বন্ধ থাকায় বেশির ভাগই দাহ করতে মহেশতলা এবং আক্রা পুর এলাকার শ্মশানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের। সমস্যার কথা মানছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পম্পা ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বজবজ পুর এলাকার বাইরেরও বহু মানুষ শ্মশানটি ব্যবহার করতেন। ফলে মানুষের সমস্যা হচ্ছে জানি। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।’’ পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি মাসেই একটি চালু হয়েছে। অন্যটি আরও দু-একমাসের মধ্যে চালু হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঠিকাদার সংস্থা সময় মতো টাকা না পাওয়ায় এত দেরি। দুর্নীতির অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন বজবজ পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্তের অভিযোগ, ‘‘বাম আমলে তৈরি হওয়া বৈদ্যুতিক চুল্লি প্রায়ই নষ্ট হয়ে পড়ে থাকত। দাহকার্যে অতিরিক্ত সময় লাগার পাশাপাশি ধোঁয়া থেকে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ করতেন মানুষ। মেরামতি করতে মাঝে মধ্যেই টাকা খরচ হত। তাই শ্মশানের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য আবেদন করে পুরসভা। দু’টি চুল্লি সংস্কার-সহ শ্মশানের অন্য কাজের জন্য ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কেএমডিএ-এর অধীনে সেই কাজ চলছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা শুধু তদারকি করছেন।
এ দিকে ‘ঢিমেতালে’ কাজের কারণেই সংস্কার দেরিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত জুলাইয়ের গোড়ায় বৈদ্যুতিক চুল্লি নিয়ে স্থানীয়েরা পুরসভায় বিক্ষোভও দেখান। বৈদ্যুতিক চুল্লিতেও ‘বাম-ভূত’ মানতে নারাজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম সম্পাদক শমীক লাহিড়ী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের সময়ে শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসেছিল। যে কোনও জিনিস পুরনো হলে সমস্যা হতেই পারে। তা মেরামতি করতে হয়। খোঁজ নিয়ে দেখুন, কে দরপত্র পাবেন, তা নিয়ে কত বার মারপিট হয়েছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy