Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

পচা জল পেরিয়েই শরীর ভাল করার পথে

মাস চারেক আগে জল ঢুকেছিল উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে জল নামলেও এখনও চারপাশ ডুবে রয়েছে হাঁটু জলে। পচে কালো হয়ে যাওয়া দুর্গন্ধময় সেই জল পেরিয়েই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতে হচ্ছে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগীদেরও।

ডাক্তার দেখিয়ে ফিরতি পথে...। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

ডাক্তার দেখিয়ে ফিরতি পথে...। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৯
Share: Save:

মাস চারেক আগে জল ঢুকেছিল উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে জল নামলেও এখনও চারপাশ ডুবে রয়েছে হাঁটু জলে। পচে কালো হয়ে যাওয়া দুর্গন্ধময় সেই জল পেরিয়েই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতে হচ্ছে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগীদেরও। তবে অভিযোগ, এ সব নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসনের। বিএমওএইচ থেকে শুরু করে বিডিও-কে জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। নাজেহাল হয়ে নিজেরাই কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। জল নামেনি। অগত্যা নরক যন্ত্রণা চলছেই।

এই পরিস্থিতি দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের মোবারকপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।

পঞ্চায়েত অফিস থেকে তিন কিলোমিটার দূরে দোতলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। চারপাশে পুকুর। এ বারের বর্ষায় পুকুর উপছে জল ঢুকেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে। পরে সেখান থেকে জল নামলেও ঢোকার মুখের জায়গা থেকে জল সরেনি। ওই এলাকার কিছু পাড়াতেও এখনও জল জমে রয়েছে। মোবারকপুর পাকা রাস্তা থেকে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব শ’খানেক মিটার। তার অর্ধেকটাই জলমগ্ন। মাস দু’য়েক আগে ওই এলাকারই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য প্রশান্ত ঘোষের মা নন্দরানি ঘোষ জমা জলের মধ্যে পড়ে যান। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরে মারাও যান তিনি। তারপরেও টনক নড়েনি প্রশাসনের।

উপ-স্বাস্থ্যেকেন্দ্রের কর্মী রিনা ভকত জানালেন, চার মাসের পচা জলের গন্ধে টেঁকা যাচ্ছে না। ডোবা জলে অনেকে পড়ে গিয়েছেন, চোটও পেয়েছেন। আর এক কর্মী শম্পা ঘোষের কথায়, ‘‘প্রসূতি মায়েদের খুব কষ্ট হচ্ছে। আমাদেরই ধরে নিয়ে গিয়ে জল পার করে দিতে হচ্ছে।’ হামিলা বিবি নামে বাজিতনগরের বাসিন্দা এক প্রসূতি বলেন, ‘‘কালো পচা জলের মধ্যে দিয়ে যেতে গিয়ে পায়ে চুলকাচ্ছে। চর্মরোগ হচ্ছে।’’ গ্রামের মানুষ জানালেন, নিজেরা দু’দিন পাম্প চালিয়েও জল বের করতে পারেননি।

উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে মোবারকপুর ছাড়াও বাজিতনগর, বরা, বড় বিশ্বেশ্বরপুর, মির্জাপুরের মতো গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ নির্ভরশীল। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াতই নয়, এই রাস্তা ধরেই মাঠ থেকে ফসল আনা, বিক্রি করতে যেতে হয়। ফলে সমস্যা নানা রকম।

কিন্তু জল সরছে না কেন?

এলাকার মানুষ জানালেন, আগে সদর রাস্তাটির দু’পাশে কাঁচা নর্দমা ছিল। বাড়ি ঘর হয়ে যাওয়ায় সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় একটি কালভার্টও ছিল। একপাশে বাড়ি ঘর তৈরি হওয়ায় সেটাও বন্ধ।

এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে জল সরানো হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে চলছে চাপানউতোর।

দেগঙ্গার বিএমওএইচ সুরজ সিংহ বলেন, ‘‘জল সরানোর ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েছিলাম।’’ প্রধান মফিজুল ইসলাম আবার বলেন, ‘‘নিকাশি নালা, কালভার্টের জন্যই মানুষের এমন সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি।’’

বুধবার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জমা জল দেখতে যান দেগঙ্গার বিডিও মনোজকুমার। তারপর তিনি বলেন, ‘‘নর্দমা, কালভার্ট বুজে যাওয়ার কারণেই ওই জায়গা থেকে জল বের করতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Dirty water logged area
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy