নিহত গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল।
মেলায় দোকান দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে দাদার হাতে খুন হতে হল ভাইকে।
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাদুড়িয়া থানার দক্ষিণ যদুরহাটি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ শেরপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল (২৫)। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গিয়াসুদ্দিনের স্ত্রী সাঞ্জুয়ারার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আব্বাসউদ্দিন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাফুরা বিবির চার ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে আব্বাসউদ্দিন। স্থানীয় বনবিবির মেলায় ঘুগনির দোকান দিয়েছিলেন তিনি। অন্য বছর দুই ভাই এক সঙ্গে মেলায় দোকান দেন। এ বার বড় ভাই ঘুগনির দোকান দিলেও ছোট ভাই নাগরদোলা চালানোর কাজ নিয়েছে। এই নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত।
ঘটনার দিন বড় ছেলেকে শান্ত করতে দুপুরে মা ঘুগনি রেঁধে দিয়েছিলেন। মেলায় সেই ঘুগনি খানিকটা বিক্রিও হয়। কিন্তু দুই ভাই এক সঙ্গে দোকান না দেওয়ায় অন্য বারের মতো বিক্রি হচ্ছিল না। তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন আব্বাসউদ্দিন। তার উপরে দোকানে রাখা মদের বোতল চুরি হওয়ায় সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে ছোট ভাইয়ের উপরে। রাতে বাড়ি ফিরলে এ সব নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসা চরমে ওঠে। ‘জরিমানা’ হিসাবে ভাইকে একটা মদের বোতল কিনে আনতে বলেন আব্বাস। ভাই রাজি না হওয়ায় মত্ত অবস্থায় দাদা হাতের সামনে রাখা ভোজালি দিয়ে ভাইকে কোপান বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গিয়াসুদ্দিনের।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ভাঙাচোরা ইটের উপরে টালি দেওয়া বাড়িটার সামনে প্রচুর মানুষের ভিড়। বাড়ির বারান্দায় পড়ে রয়েছে নিহতের রক্তাক্ত দেহ। তা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী-মা-বোনেরা।
এক বছরের সোয়েলকে জড়িয়ে ধরে সাঞ্জুয়ারা বিবি বলেন, “দিনমজুর খাটা অভাবের সংসারে প্রায়ই দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসা-হাতাহাতি লেগে থাক। আবার তা মিটেও যেত। কিন্তু মেলায় আলাদা দোকান দেওয়া আর মদ চুরির অভিযোগ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। প্রতিবেশীদের ডাকতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি, বারান্দায় স্বামীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে। তাঁর দাবি, রক্ত মাখা ভোজালি হাতে ভাসুরকে পালাতেও দেখেছেন তিনি।
এ দিকে, ধরা পড়ার পরে অবশ্য অনুতপ্ত আব্বাস। কান্নায় ভেঙে পড়ে এ দিন বললেন, “মদের ঘোরে এতটাই উন্মত্ত হয়ে পড়েছিলাম, কখন যে ভাইয়ের বুকে-পেটে ভোজালি চালিয়ে দিয়েছি, বুঝতেই পারিনি।” যখন হুঁশ এল, দেখি দেহে আর প্রাণ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy