পারফিউম না পারফিউম অয়েল, সুগন্ধি হিসাবে বেছে নেবেন কোনটি? ছবি: ফ্রিপিক।
গন্ধের সঙ্গে মনের যোগ থাকেই। বিশ্রী গন্ধে যেমন বিরক্তি বোধ হয়, তেমন পছন্দের কোনও সৌরভে মন ভাল হয়ে ওঠে। কেউ গায়ের দুর্গন্ধ এড়াতে সুগন্ধি ব্যবহার করেন, কেউ আবার দিনভর নিজেকে সুবাসিত রাখতেই পছন্দ করেন। কারণ যা-ই হোক, সাজগোজের পর একটু সুগন্ধির ছোঁয়া যেন নিজেকে তরতাজা রাখতেও সাহায্য করে। কিন্তু পারফিউম স্প্রে ব্যবহার করবেন, না কি বেছে নেবেন পারফিউম অয়েল?
কী এই পারফিউম অয়েল?
এটি এক ধরনের সুগন্ধি তেল। যা প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন ফুল, গাছ, ফল— ইত্যাদি থেকে তৈরি করা হয়। এতে থাকে এসেনসিয়াল অয়েল এবং কেরিয়ার অয়েল মিশ্রণ। শুনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, বাজারচলতি গায়ে বা মাথায় মাখার সুগন্ধি তেলও কি তবে একই? কারণ, গায়ে মাখার জন্য রকমারি ব্র্যান্ডের তেলে সুন্দর গন্ধ মেলে। এমনকি, মাথাতেও সুগন্ধি তেল মাখার চল রয়েছে। উত্তর হল, না। এই সুগন্ধি তেল বা পারফিউম অয়েলের কাজই হল সুবাসিত করা। বলা চলে, এটি পারফিউমের অন্য একটি রকমফের।
তফাত কোথায়?
পারফিউম এবং পারফিউম অয়েল দু’টির কাজ একই। সুবাসিত করা। তবে দু’টির মধ্যে তফাত রয়েছে উপাদান, পরিমাপ এবং তৈরির পদ্ধতিতে। পারফিউমে মূলত সুগন্ধি তেল, অ্যালকোহল এবং জলের মিশ্রণ থাকে। অনেক সময় থাকে রাসায়নিকও। তবে মূল পার্থক্য হল পরিমাপে। এতে সুগন্ধি তেল সর্বোচ্চ ১৫-২০ শতাংশ ব্যবহার করা হয়। তৈরির পদ্ধতিও আলাদা। অন্য দিকে, পারফিউম অয়েল তৈরি হয় মূলত এসেনশিয়াল অয়েল এবং কেরিয়ার অয়েল মিশিয়ে। এতে এসেনশিয়াল অয়েলের মাপ ২০-৩০ শতাংশের উপরে থাকে।
গন্ধে এবং স্থায়িত্বে পার্থক্য হয় কি?
পারফিউম সাধারণত পোশাকে স্প্রে করতে হয়। কেউ কেউ কব্জিতে বা ঘাড়ের পাশেও এটি স্প্রে করেন। এই ধরনের সুগন্ধিতে অ্যালকোহল থাকায় পোশাকে স্প্রে করার পর তা আশপাশের বাতাসে ক্রমশ মিশতে থাকে। ফলে কেউ এই ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করলে তা কাছাকাছি থাকা মানুষেরা টের পান। খুব ভাল মানের পারফিউমের গন্ধ গায়ে এবং পোশাকে মোটামুটি ৬-৮ ঘণ্টা থাকে। তবে তা নির্ভর করে সুগন্ধির গুণমান এবং কিছুটা ত্বকের উপরেও।
সুগন্ধি তেলের বিষয়টি খানিক আলাদা। এতে এসেনশিয়াল বা প্রাকৃতিক তেলের মাত্রা বেশি থাকায়, এর ঘনত্বও বেশি হয়। ফলে ত্বকে ব্যবহার করলে, সেখানেই রয়ে যায়। উবে যেতে পারে না। এটি ছোট, মাঝারি রকমারি শিশিতে বিক্রি হয়। ব্যবহারের জন্য ড্রপার বা রোল-অন থাকে। শিশির মুখে থাকা ছোট্ট গোল অংশটি হাতের কব্জি বা কানের পাশে ঘষলে বেরিয়ে আসে পারফিউম অয়েল। এর ঘনত্ব বেশি থাকায়, পারফিউমের গন্ধের তুলনায় এর সুবাস দীর্ঘস্থায়ী হয়। আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সৌরভ ছড়ায় পারফিউম অয়েল।
দু’টির মধ্যে আরও একটি তফাত হল, পারফিউম স্প্রের গন্ধ খানিক দূর থেকে পাওয়া গেলেও, পারফিউম অয়েলের গন্ধ ব্যবহারকারীর একেবারে কাছে না এলে পাওয়া যায় না।
কোনটি মাখবেন?
স্পর্শকাতর ত্বক হলে অ্যালকোহল যুক্ত সুগন্ধি স্প্রে এড়িয়ে চলাই ভাল। তার উপর যদি তাতে রাসায়নিক মেশানো থাকে, তা ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। র্যাশ, জ্বালা, চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের আবার বিশেষ কোনও এসেনশিয়াল অয়েলে অ্যালার্জি থাকে। যে সুগন্ধি কিনছেন, তার উপাদান সম্পর্কে জেনে তবেই ব্যবহার করা ভাল। যদি চান সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ুক, বেছে নিতে পারেন স্প্রে। তা ছাড়া এটি ব্যবহার করাও বেশ সুবিধাজনক। আবার দিনভর নিজে সুবাসিত থাকতে, ত্বকের কথা ভাবলে বেছে নিতে পারেন পারফিউম অয়েল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy