বন্দি: তখনও বন্দি মা কুকুর। নিজস্ব চিত্র
রাত থেকে প্রতিবেশীদের কানে ভেসে আসছিল তাদের কান্নার আওয়াজ। মাধে মধ্যে শোনা যাচ্ছিল তাদের মায়ের আর্তনাদও। শীতে কাঁদছে ছানারা—এমনই ভেবেছিলেন পাড়ার লোকজন। ভোর হতেই বিষয়টি পরিষ্কার হল।
রবিবার ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে এক মহিলা দেখলেন, বনগাঁর মুখ্য ডাকঘরে আটকা পড়েছে একটি কুকুর। আর ওই দরজার সামনেই বসে কাঁদছে তার দুই ছানা। তিনি তড়িঘড়ি কিছু খাবার এনে দেন কুকুরছানাগুলিকে। খবর পেয়ে আসে পাড়ার লোকজনও। কেউ বা বিস্কুট দিচ্ছেন কেউ রুটি। স্থানীয় বাসিন্দারা বাচ্চা দু’টিকে কোলে করে আদরও করছেন। কিন্তু ছানারা তখন খেতেও চায়নি। মায়ের আদরের জন্য ব্যকুল তারা। ভিতরে বসে মা-ও বোধ হয় সেই অপেক্ষাতেই।
পাড়ার লোকও মা কুকুরটিকে বের করার জন্য উদ্যোগী হন। খবর দেওয়া হয় দমকল বাহিনীকে।
ইতিমধ্যে ডাকঘরের পিছনের জানালা দিয়ে বন্ধ ঘরে থাকা মা কুকুরটিকে কাছে সন্তানদের ঢুকিয়ে দিলেন স্থানীয় লোকজন। ও ভাবেই খাবারও দেওয়া হল মা কুকুরটিকে। সন্তান পেয়ে মা তখন খিদে ভুলেছে। মুখে আদুরে আওয়াজ। জিভ দিয়ে চেটে সন্তানদের আদর করতে ব্যস্ত মা। আবার একটু দূরে সরে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে জুটছে মায়ের বকুনিও।
এর মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় দমকল বাহিনী। কিন্তু তাঁরা জানান, সরকারি অফিসের বন্ধ তালা ভেঙে তাঁরা ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। মাথায় হাত এলাকাবাসীর। এ ভাবে কী সারাদিন বন্ধ ঘরে মা ও ছানাদের রাখা যায়? কী করা যায়? পাড়ার লোকেরা খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল, ওই ডাকঘরের এক কর্মী থাকেন স্থানীয় কালুপুর এলাকায়। তাঁর কাছে চাবি রয়েছে। এক যুবককে চাবি আনতে পাঠানো হয়। যুবক ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। তিনিই এসে চাবি খুলে মা ও ছানাদের মুক্ত করেন।
তবে ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁদের কথায়, ‘‘একটা জ্যান্ত কুকুর ডাকঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। অথচ কারও চোখে পড়ল না। যিনি তালা বন্ধ করেছিলেন তিনি কেন দেখলেন না?’’
ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় এক মহিলা কর্মী অফিস বন্ধ করেছিলেন। কেন তিনি খেয়াল করেননি, তা খতিয়ে দেখছে ডাকঘর কর্তৃপক্ষ। মুখ্য ডাকঘর হওয়া সত্ত্বেও এখানে কেন কোনও নৈশ প্রহরী নেই। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy