—নিজস্ব চিত্র।
বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তাঁর দেহ নিয়ে রাস্তায় বসে রইল পরিবার। পরিবারের দাবি, যক্ষ্মায় মৃত্যু হলেও বৃদ্ধ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে দাবি বাড়িওয়ালার। সংক্রমণের ভয়েই বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছেন না তিনি। যদিও আধার বা ভোটার কার্ডের মতো পরিচয়পত্র না থাকায় বৃদ্ধের মৃত্যুর শংসাপত্র জোগাড় করতেও বিপাকে পড়েছে ওই পরিবার। তবে রবিবার দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকার পর বিকেলে পুলিশ এসে ওই দেহ নিয়ে গিয়েছে মর্গে। যদিও পরিবার থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র পরিচয়পত্রের অভাবে মর্গে তা বেওয়ারিশ লাশ হিসাবেই পড়ে রয়েছে।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত হাসপাতালের বাইরে ওই বৃদ্ধকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। পরিবার জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ওই হাসপাতালেই যক্ষ্মার চিকিৎসা চলছিল বছর সত্তরের বৃদ্ধের। অভিযোগ, ১৭ জুলাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও বাড়িতে ঢুকতে দেননি বাড়িওয়ালা অঞ্জলি পোদ্দার। তার পর থেকে হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের কাছেই থাকতেন ওই বৃদ্ধ। তাঁর স্ত্রী-র দাবি, ‘‘টিবি রোগ সারাতে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তবে টিবি ধরা পড়েছে বলে অক্সিজেন দিয়ে ওরা ছেড়ে দেয়। বাড়ি নিয়ে গেলেও বাড়িওয়ালা ঘরে তুলতে দিল না। বলেছিল, করোনায় সকলে মারা যাবে।’’ যদিও সে দাবি অস্বীকার করে অঞ্জলির পাল্টা দাবি, ‘‘মদ খেয়ে এসে বুড়ো শুয়েবসে থাকত। আমরা তাড়াইনি। ওর মেয়ে-বউই তাড়িয়ে দিয়েছিল। এক বছর ধরে ভাড়া রয়েছে। ছ’মাসের ঘরভাড়াও দেয়নি।’’
শুধুমাত্র বাড়িওয়ালাই নন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওই পরিবারের। তাদের দাবি, মৃত্যুর সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন না থাকায় ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে চাইছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বাইরের চিকিৎসকের থেকে তা নিতে বলছেন। যদিও অন্য কোনও চিকিৎসকের কাছে বৃদ্ধের চিকিৎসা না হওয়ায় তাঁরাও শংসাপত্র দিতে রাজি নন। বৃদ্ধের স্ত্রী জানিয়েছেন, বারাসতের বিজয়নগর এলাকায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করলেও আদতে তাঁদের বাড়ি বিহারে। স্ত্রীর কথায়, ‘‘বারাসতে আমরা রাস্তা সারাইয়ের কাজ করি। বিহারে শ্বশুরবাড়ি হলেও বনগাঁয় থাকি। সকালে স্বামী মারা যাওয়ার পর ডেথ সার্টিফিকেট পাচ্ছি না। আমরা ওঁকে নিয়ে যেতে চাই।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয়ন্ত ঘোষের দাবি, ‘‘ওই পরিবার কোনও সাহায্য চায়নি। তবে শুনেছি ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। আমার মতে, বারাসত হাসপাতালে দেহ নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত করালে সেখান থেকে তা পাওয়া যাবে।’’ যদিও প্রেসক্রিপশন দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েছেন বারাসত পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়। তবে এরই মাঝে রবিবার বিকেলে দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরিচয়পত্র না থাকায় সেখানেই বৃদ্ধের ‘বেওয়ারিশ’ দেহ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy