পুলিশি হেফাজতে ধৃত ডাম্পি।
বৌমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক জেনে ফেলেছিলেন শাশুড়ি। সে জন্য শাশুড়ির মুখ বন্ধ করতে প্রেমিককে দিয়ে তাঁকে খুন করে বৌমা। গত মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার নেহালপুরের ঘোষপাড়ায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, মলিনা ঘোষ (৫৫) নামে ওই বৃদ্ধাকে যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, সেই অস্ত্র প্রেমিক নিতাই দাসের হাতে তুলে দিয়েছিল বৌমা ডাম্পি ঘোষ।
বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি, নিহত বৃদ্ধার বৌমা ডাম্পির সঙ্গে পেশায় রাজমিস্ত্রি নিতাইয়ের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সে কথা জেনে গিয়েছিলেন মলিনাদেবী। সমস্যা বাড়বে বুঝতে পেয়ে নিতাইকে দিয়ে তাঁকে খুন করানোর পরিকল্পনা করে ডাম্পি। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ধৃতদের রবিবার বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ৬ দিন পুলিশ হেফাজাতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহতের স্বামী কেনারাম ঘোষ জানান, তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলেমেয়েদের সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে অসিত অটো চালান। কেনারাম বলেন, ‘‘ছেলে আলাদা থাকে। ঘটনার দিন রাতে খাওয়া শেষে স্ত্রী বাসন মাজছিল। হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, একজন স্ত্রীর মাথায় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করে পালাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেন।’’ এর পরেই তিনি থানায় অজ্ঞাতপরিচয়ের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাম্পির সঙ্গে তার শাশুড়ির বনিবনা ছিল না। একবার স্বামীকে নিয়ে ডাম্পি অন্যত্র চলেও গিয়েছিলেন। অপরাধী চিহ্নিত করতে পুলিশকে প্রথম দিকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। পরে এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ডাম্পির চালচলন ও কথাবার্তা শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়।
পুলিশ জানতে পারে, মাস তিনেক আগে নেহালপুরে একটি বাড়িতে কাজ করতে আসেন বাদুড়িয়ার রাজবেড়ায়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি নিতাই। সে সময়ে ডাম্পির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। পুলিশ নিতাইকে আটক করে জেরা শুরু করে। প্রথমে তিনি কিছু না বলতে চাননি। পরে ডাম্পির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের দাবি।
বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্রের দাবি, ‘‘নিতাই আরও জানিয়েছে, ডাম্পির কথাতেই তিনি নতুন দা কিনে আনেন। তিনিই মলিনাদেবীকে কোপান।’’ এর পরেই ডাম্পিকে আটক করে পুলিশ। দুই অভিযুক্তকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা শুরু হয়। তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন ডাম্পি। পুলিশের দাবি, ওই মহিলা জেরায় জানিয়েছেন, শাশুড়ি তাঁর স্বামীর রোজগারের টাকা নিয়ে নিতেন। সেটা তাঁর পছন্দ ছিল না। তার উপরে শাশুড়ি তাঁর ও নিতাইয়ের সম্পর্কের কথা জেনে যান। সে কথা অসিতকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন শাশুড়ি। সে সব কারণেই খুনের ছক কষা হয়। খুনের জন্য ব্যবহৃত দা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy