Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Dams Damaged in South 24 Parganas

নিম্নচাপের দোসর পূর্ণিমা, জোয়ারে নদীবাঁধ ভেঙে ভাসছে মৌসুনী দ্বীপ, প্লাবিত পাথরপ্রতিমাও

দক্ষিণ ২৪ পরগনার উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্র মৌসুনী দ্বীপ। প্রতি বছর বহু মানুষ সেখানে ঘুরতে যান। নিম্নচাপের সঙ্গে পূর্ণিমার জোয়ার প্লাবিত করেছে এই দ্বীপটিকে।

মৌসুনী দ্বীপে নদীবাঁধ ভেঙে বিপত্তি।

মৌসুনী দ্বীপে নদীবাঁধ ভেঙে বিপত্তি। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪২
Share: Save:

একে নিম্নচাপ দানা বেঁধেছে বঙ্গোপসাগরের উপরে। তায় আবার পূর্ণিমা। ভরা কোটালে ভেঙে গেল মৌসুনী দ্বীপের নদীবাঁধ। প্লাবিত গোটা এলাকা। শুধু মৌসুনী দ্বীপ নয়, জোয়ারের জলে পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর এলাকাতেও একই ভাবে একটি নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ তৈরি না হওয়ায় প্রতি বছর এই সমস্যা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌসুনী দ্বীপ উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্র। এর এক দিকে রয়েছে চিনাই নদী, এক দিকে রয়েছে মুড়িগঙ্গা নদী এবং আর এক দিকে বঙ্গোপসাগর। মৌসুনী দ্বীপ এলাকায় নদীর সংখ্যা বরাবরই বেশি। সেখানকারই বটতলা নদীতে ৮০০ মিটারের বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঁধ ভেঙে গিয়েছে জোয়ারের জলে। নদীর জল গ্রামে ঢুকে ভাসিয়ে দিয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট। এমনকি, পর্যটকদের জন্য তৈরি বিভিন্ন কটেজেও জল ঢুকে পড়েছে। নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ প্রভঞ্জন মণ্ডল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না। তাঁদের আশঙ্কা, জোয়ারের জল আরও বাড়বে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইছেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা গুলজান বিবি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি খুব খারাপ, আমরা এখানে থাকতে পারছি না। নদীর বাঁধ ভাল না হলে আমরা বাঁচতে পারব না। আমাদের তো থাকার অন্য কোনও জায়গা নেই। বাড়ি ছেড়েই বা কত দিন থাকব।’’ শেখ জুলফিকার নামের আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘৮০০ থেকে সাড়ে ৮০০ মিটারের নদীবাঁধ পুরো ভেঙে গিয়েছে। মানুষ আতঙ্কিত। রাতে ছেলেপুলে নিয়ে কী করে থাকবেন, কেউ জানে না। সরকারের কাছে আমার আবেদন, কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরি করে দেওয়া হোক।’’

পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরেও ভেঙেছে সদ্য তৈরি নদীবাঁধ। ২০২২ সাল থেকে ওই বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। ২০২৪ সালে কাজ শেষ হয়েছে। অভিযোগ, ৪৪ কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ তৈরি করা হলেও তাতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। সেই কারণেই ভরা কোটালের জলস্ফীতিতে বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। নদীর জল ঢুকে পড়েছে গ্রামে। এর ফলে চাষের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়েরাও। এলাকায় ১২০০ মিটার কংক্রিটের স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কাল থেকে জল ঢুকছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। সুব্যবস্থা চাইছি। প্রতি বছর বর্ষায় এটা হয়। বাড়িতে যা জল ঢুকে গিয়েছে, রাস্তায় থাকতে হবে। এখনও কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি।’’

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরে উপকূলবর্তী এলাকায় বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। মৎস্যজীবীদের জন্যও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিম্নচাপের মাঝে ভরা কোটাল বিপর্যয় ডেকে এনেছে উপকূলঘেঁষা গ্রামগুলিতে। দ্রুত সমাধান চাইছেন এলাকার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dams River Dam South 24 Pargana Mousuni Island
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE