এই সেই পদ। নিজস্ব চিত্র ।
ভারতের সেরা পুষ্টিকর খাবারের দৌড়ে প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিল সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহবধূর তৈরি ‘কাঁকড়া-ডাল।’ একটি সর্বভারতীয় সংস্থার উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশব্যাপী পুষ্টিকর খাবারের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই প্রতিযোগিতায় মৈপিঠ কোস্টাল থানার পূর্ব গুড়গুড়িয়ার বাসিন্দা গঙ্গারানি হালদারের তৈরি কাঁকড়া-ডালের রেসিপি পাঠিয়েছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গোটা দেশের প্রায় ৮০০ রেসিপির মধ্যে থেকে গঙ্গারানির সেই রান্না জায়গা করে নিয়েছে সেরা পাঁচে। আগামী সপ্তাহে মুম্বই যাবেন গঙ্গারানি। ২৭ এপ্রিল সেখানে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় বিচারকদের সামনে নিজেই রাঁধবেন কাঁকড়া-ডাল।
শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী, দুই ছেলেকে নিয়ে গঙ্গারানির সংসার। স্বামী চাষ-বাস করেন। বছর পঁয়তাল্লিশের গঙ্গারানি মূলত ঘর সামলান। রোজকার প্রয়োজনেই রান্নাঘরে কাটে অনেকটা সময়। চিরাচরিত নানা পদের সঙ্গে নিজের ভাবনা মিশিয়ে প্রায়ই বানিয়ে ফেলেন নিত্যনতুন খাবার। সুন্দরবন ঘেঁষা এই সব এলাকায় কাঁকড়া খুবই সহজলভ্য। কাঁকড়ার নানা চেনা পদ বাড়িতে প্রায়ই বানাতেন গঙ্গারানি। এক দিন সেই কাঁকড়ার সঙ্গে ডালের মিশেলে তৈরি করে ফেলেন কাঁকড়া-ডাল। পরিবারের লোকের পাশাপাশি বাড়িতে আসা অতিথিদের প্রায়ই খাওয়াতেন তাঁর তৈরি এই পদ। এ ভাবেই এক দিন তাঁর বাড়িতে আসা এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কয়েক জন সদস্য কাঁকড়া-ডালের স্বাদ পান। তাঁরাই পুষ্টিকর খাবারের সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে দেন গঙ্গারানির ওই রেসিপি।
জয়নগরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে অমিতাভ রায় বলেন, “সুন্দরবন ঘেঁষা এই সব এলাকায় কৃষক-মৎস্যজীবীদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করছে আমাদের সংগঠন। সেই সূত্রেই ওই চাষি পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিচয়। কাজের ফাঁকেই এক দিন গঙ্গারানির বাড়িতে খেতে গিয়ে তাঁর তৈরি কাঁকড়া-ডাল খেয়ে চমকে যাই। কাঁকড়ার পদ সাধারণত মশলাদার হয়। কিন্তু এটা খুবই সাধারণ ও পুষ্টিকর একটা খাবার। সেই সঙ্গে স্বাদও দুর্দান্ত। তখনই ঠিক করি, কাঁকড়া ডালের রেসিপি আমরা ওই প্রতিযেগিতায় পাঠাব। আজ গোটা দেশের সেরা পাঁচ রেসিপিতে জায়গা করে নিয়েছে গঙ্গারানির কাঁকড়া-ডাল। আশা করছি, সুন্দরবনের এই খাবার দেশের সেরা হবে।”
গঙ্গারানির কথায়, “দু’ধরনের ডাল আর কাঁকড়া দিয়ে এই পদ তৈরি হয়। খুব বেশি মশলা লাগে না। হাল্কা খাবার হিসেবেই খাওয়া যায়। বাড়িতেই খাওয়ার জন্য বানাতাম। কেউ এলেও বানিয়ে দিতাম। ভাবিনি, কোনও দিন মুম্বইয়ে গিয়ে বানাতে হবে। খুবই ভাল লাগছে।” স্ত্রী সাফল্যে খুশি গঙ্গারানির স্বামী অশোক হালদার। তিনি বলেন, “ঘরের সামান্য একটা রান্না এত বড় মঞ্চে স্বীকৃতি পাবে ভাবিনি। ওই সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy