বেপরোয়া: এখনও মাস্ক ছাড়াই চলছে আড্ডা, বাইরে ঘোরা। গোপালনগর এলাকায় ছবিগুলি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
উদ্বেগ বাড়িয়ে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছে উত্তর ২৪ পরগনায়।
স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২০ ডিসেম্বর জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬২ জন। রবিবার জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০৫৩ জন। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। শেষ ৯ দিনে (১-৯ জানুয়ারি) জেলায় মারা গিয়েছেন ৩৮ জন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে ৯৯টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।
এরপরেও কিছু মানুষের মধ্যে সচেতনতার বালাই নেই। করোনা বিধি শিকেয় তুলে বেলাগাম জনতার ভিড় দেখা যাচ্ছে বাজার-হাটে। পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু বনগাঁ-শিয়ালদহ এবং শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখায় ট্রেনের কামরায় উপচে পড়া ভিড়ই দেখা যাচ্ছে। প্রচুর মানুষ গাদাগাদি করে কামরায় দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। দূরত্ববিধি বজায় রাখতে চিহ্ন দিয়ে ট্রেনের দু’টি আসনের মাঝে ফাঁকা রাখার জন্য বলা হলেও, বাস্তবে তা মানা হয়নি। অনেক স্টেশনে ট্রেনে ওঠা-নামার সময় শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা যাচ্ছে না। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাস,অটো, টোটোতে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে যাত্রীদের।
জেলার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা, মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের ফলে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ বাড়ায় ইতিমধ্যেই করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘জেলায় এখন দৈনিক ১৫ হাজার করে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে।’’ করোনা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত আছে। জেলার হাসপাতাল গুলিতে ২ হাজার শয্যা তৈরি আছে। তবে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই বাড়িতে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে আসছেন কম। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জেলার চারটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির কাজ শেষ। আরও কয়েকটির কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।
সোমবারও অনেককেই মাস্ক ছাড়া রাস্তায় ঘুরতে দেখা গেল। বাজার হাটে দূরত্ব বিধি ভেঙে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। টোটো-অটোতে গাদাগাদি করে যাতায়াত করেছেন অনেকেই। জেলা জুড়ে পুলিশি তৎপরতা দেখা গিয়েছে। রাস্তায় নেমে কোভিড বিধি মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে মানুষকে। মাস্ক বিলি করা হয়েছে বহু জায়গায়। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরনোর অভিযোগে পুলিশ নিয়মিত গ্রেফতার করেছে।
বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার, মাস্ক বিতরণ শুরু হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। জেলায় সেফ হোম ফের খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দ্রুত হারে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ও থানায়। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল, বারাসত জেলা হাসপাতাল, অশোকনগর স্টেট জেনারেল কোভিড হাসপাতাল ও হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে আগামী দিনে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। গোবরডাঙা-সহ কয়েকটি থানার পুলিশ কর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার থেকে জেলায় বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy