প্রতীকী ছবি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বাড়িতেই ছিলেন। তবে শ্বাসকষ্ট ছিল। মারা যান হঠাৎই। তারপরে সৎকার নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। বুধবার ভোর ৪টা নাগাদ মারা যান ওই যুবক। স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন দেহ বাড়ি থেকে নিয়ে যায় রাত ১০টা নাগাদ।
গাইঘাটার চাঁদপাড়ার ঘটনা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর পরে শুরু হয় নানা জটিলতা। প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েও সঙ্গে সঙ্গে কাউকে পাঠানো হয়নি। এমনকী, মৃত্যুর শংসাপত্রও জোগাড় করতে হয় নিজেদের। মৃতের ভাই বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের এক চিকিৎসক সদস্য দাদাকে দেখে মৃত বলে জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর থেকে কোনও চিকিৎসক আসেননি। আমার প্রশ্ন, যাঁদের পরিচিত চিকিৎসক নেই, তাঁদের এই পরিস্থিতি হলে কী হবে!’’
গোটা ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে পড়ে থাকায় তাঁরা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, দেহ সৎকার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাতেই সৎকার করা হবে।
চাঁদপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান দীপককুমার দাস জানান, কোভিড রোগীর সৎকার করার মতো ব্যবস্থা পঞ্চায়েতের নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর ও ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন তাঁরা। গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘দাহ করার আইনি প্রক্রিয়া দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যায়।’’ তা হলে দেহ বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে এত দেরি হল কেন? সুজন বলেন, ‘‘বনগাঁ শ্মশানে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে কোভিড রোগীর দেহ সৎকার হয়। রাত ২টোর মধ্যে শ্মশান জীবাণুমুক্ত করা হয়। রাত ১২টার আগে যেহেতু সৎকার করা সম্ভব নয়, তাই দেহ নিয়ে যেতে সময় লেগেছে।’’ গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাসের কথায়, ‘‘মৃত যুবক কোভিড না, নন-কোভিড এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে সংশয় ছিল। এই জটিলতায় কিছুটা সময় লেগেছে। মৃতের পরিবারের কাছে যুবকের নন কোভিড হওয়ার কোনও সরকারি নথিপত্র ছিল না।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই যুবক। সেখানেই লালারস পরীক্ষা হয়। ৮ অগস্ট করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তারপর থেকে যুবক বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে ছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১৭ দিন পরে কোনও করোনা আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ না থাকলে তাঁকে সুস্থ বলেই ধরে নেওয়া হয়। ওই যুবকের রিপোর্ট আসার পরে ১৯ দিন কেটে গিয়েছে। তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না। তবে যুবকের ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল আগে থেকেই। যে স্থানীয় চিকিৎসক মৃত্যুর শংসাপত্র লিখেছেন, তিনি মৃত্যুর কারণ ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ লিখেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
কিন্তু তা হলে যুবককে কোভিড ধরে নিয়ে সৎকারের বিশেষ প্রক্রিয়া নেওয়া হল কেন?
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের চাপ ছিল। তা ছাড়া, ওই বাড়িতে আরও একজন করোনা রোগী আছেন এই মুহূর্তে। সে কারণে আমরা বিশেষ পদ্ধতি মেনেই যুবককে করোনা রোগী ধরে নিয়ে দাহের ব্যবস্থা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy