প্রতীকী ছবি
পুজোর পরে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে বলে চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ বার বার সতর্ক করছেন। হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে বেডের আকাল হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। এমনিতে করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই হাসপাতাল-নার্সিংহোমে বেড মিলছে না বলে ভুরি ভুরি অভিযোগ ছিল। বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ইতিমধ্যেই ঠাসাঠাসি অবস্থা। হাতে টাকা নিয়ে ঘুরলেও বেড পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
দুই ২৪ পরগনার কোভিড হাসপাতালগুলিতেও কার্যত ঠাঁই নেই-ঠাঁই নেই রব উঠেছে। পুজোর ভিড় করোনা আবহে কী বিপদ ডেকে আনবে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্তারা।
উত্তর ২৪ পরগনায় বর্তমানে বেশ কয়েকটি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। বারাসতে রয়েছে দু’টি, ব্যারাকপুরে একটি, অশোকনগরে একটি, বসিরহাটে একটি, খড়দহে একটি। মাস তিনেক আগে একমাত্র বারাসতে একটি কোভিড হাসপাতাল ছিল। বাকি রোগীদের পাঠানো হত কলকাতায়। ব্যারাকপুরে উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। পরে বসিরহাটের অদূরে একটি নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার শুরু করে স্বাস্থ্য দফতর। সংক্রমিতের দিক থেকে কলকাতার পিঠোপিঠিই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ফলে কলকাতার কোভিড হাসপাতালগুলির উপরে চাপ বাড়ছিল। মাস দু’য়েক আগে বারাসতের একটি নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতালের রূপ দেওয়া হয়। তাতেও সামলানো যাচ্ছিল না রোগীর চাপ। সম্প্রতি ব্যারাকপুর, অশোকনগর এবং খড়দহে চালু হয়েছে তিনটি পৃথক কোভিড হাসপাতাল। জেলার রোগীরা সেখানে সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি বদলায়নি খুব বেশি। কারণ, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে রোগীর চাপ বাড়ছে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে দৈনিক সংক্রমণ পাঁচশোর আশেপাশে থাকছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করে। মাসের শেষের দিকে সংক্রমিতের দৈনিক সংখ্যা ছ’শো ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে গড়ে রোজ সাড়ে সাতশোর বেশি রোগী সংক্রমিত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৭৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৫৫৬ জন। তার ফলে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ দিন জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৮০৯ জন। জেলায় সব হাসপাতাল মিলিয়ে শয্যার সংখ্যা পাঁচশোরও কম। প্রায় সাত হাজার অ্যাক্টিভ রোগীর মধ্যে চিকিৎসা পেতে পারেন পাঁচশোর কাছাকাছি রোগী। পুজোর বাজার এবং পুজোর ভিড়ে এখানেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন চিকিৎসকেরা। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা পুজোর পরে আচমকা বেড়ে যাওযার যে আশঙ্কা চিকিৎসক মহল করছেন, তাতে বহু রোগীর ঠাঁই মিলবে না হাসপাতালে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, অন্তত এই বিষয়টি মাথায় রেখে পুজোর সময়ে ভিড় না বাড়িয়ে সকলে বাড়িতে থাকুন। কারণ, জটিল রোগীর চিকিৎসার জন্য জেলায় আইসিসিইউ শয্যা মাত্র ৫০টি।
চিন্তার আরও বড় কারণ, বনগাঁ মহকুমায় এখনও পর্যন্ত কোনও কোভিড হাসপাতাল নেই। বসিরহাটে ৩০ শয্যার যে হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে আইসিসিইউ নেই।
গ্রামীণ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একমাত্র ক্যানিংয়ে রয়েছে কোভিড হাসপাতাল। সেখানে শয্যা সংখ্যা মাত্র ৫০। যার বেশিরভাগই ভর্তি। প্রায় ভর্তি আইসিসিইউ ইউনিটও। এমআর বাঙুর হাসপাতাল বর্তমানে কোভিড স্পেশাল হাসপাতাল। এটিও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কিন্তু এখানে শয্যা মেলাই দুষ্কর বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জোকার কোভিড হাসপাতালে শ’দুয়েক বেডের মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬০-৭০টি বেডে রোগী ভর্তি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। সেখানেও বাড়ছে রোগীর চাপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy